বিষয় :

সর্বনাশা মাদক দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে: সেতুমন্ত্রী


২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ৬:০০ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট :: সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মাদক দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে মাদক ছড়িয়ে যায়নি। এই মাদক আমাদের তরুণ সমাজের একটা বড় অংশকে গ্রাস করেছে।’

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সংসদ নূরজাহান বেগমের (সংরক্ষিত আসন-৪২) এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মাদক থেকে তরুণ সমাজকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক নেতাদেরও ভূমিকা রয়েছে। আপনারা শুধু রাজনৈতিক বক্তব্য দিলে চলবে না, এসব বিষয়ে এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে হবে।

সংসদে মন্ত্রী বলেন, লাইসেন্স প্রার্থীদের রক্ত পরীক্ষার প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, একজন চালক যদি রেস্টলেস ড্রাইভিং করে অর্থাৎ কোনো প্রকার বিরতি ছাড়াই ২৪ ঘণ্টা বা তার অধিক সময় গাড়ি চালায় তাহলে তার দুর্ঘটনায় পতিত হবার আশঙ্কা বেশি থাকে। সে কারণে আমরা ড্রাইভারদের কাউন্সেলিং করার পরিকল্পনা করেছি। বেসরকারি গাড়ির মালিকদেরও বলেছি, তারা যেন তাদের গাড়িচালকদেরও কাউন্সেলিং করেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওযার সময় রক্ত পরীক্ষার বিষয়ে আমরা চিন্তা করব।

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যানজট নিরসনকল্পে ঢাকা শহরের চারপাশে সার্কুলার রুটের (অংশ-২) উন্নয়ন করা হবে। সার্কুলার রুটের (অংশ-২) আওতায় তেরমুখ-আব্দুল্লাপুর-ধউর-বিরুলিয়া-গাবতলী-বাবুবাজার-পোস্তগোলা-ফতুল্লা-চাষারা-ডেমরা রুটটি উন্নয়ন করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত রুটের ধউর পয়েন্ট এবং গাবতলী পয়েন্টে দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এই দুটি ফ্লাইওভারের ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ডিটেইল ডিজাইনের কাজ চলমান রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ঢাকা (বনানী), জয়দেবপুর মহাসড়কের এয়ারপোর্ট মোড়ে ৭০০ মিটার দীর্ঘ একটি এবং জসিমউদ্দিন মোড়ে ৬০০ মিটার দীর্ঘ আরো একটি ছয় লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।

সাংসদ হাবিবুর রহমানের (বগুড়া-৫) প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশনের প্রকাশিত ‘রোড ট্রাফিক এক্সিডেন্ট ডেথ রেট বাই কান্ট্রি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী পৃথিবীর ১৭২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর হার পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে কম। এমনকি ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, থাইল্যান্ড, রাশিয়া, মালয়েশিয়া এবং শ্রীলঙ্কার তুলনায় কম। সংস্থাটির ২০১১ সালের রিপোর্টে বাংলাদেশের স্থান ছিল ৯০তম। এ থেকে বোঝা যায় দেশের সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমাতে চালকদের মান বাড়াতে, যাত্রী, চালক, মালিক ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- এসডিজি-২০৩০ অনুযায়ী পরিকল্পণা গ্রহণ, সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ, মহাসড়কগুলোর প্রশস্তকরণ, ২২টি মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ, জাতীয় মহাসড়কে ১২১টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে প্রতিকারমূলক প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনা, মহাসড়কে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিবেগ ৮০ কিলোমিটার এবং ঢাকাসহ অন্য সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪০ কিলোমিটার নির্ধারণসহ নানাবিধ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কামরুল আশরাফ খানের (নরসিংদী-২) এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পুলিশ বিভাগের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য অনুসারে প্রতি ১০ হাজার যানবাহনের মৃত্যুর হার ২০১১ সালে ১৫.১২, ২০১২ সালে ১৩.৭৬, ২০১৩ সালে ৯.৮৮, ২০১৪ সালে ৯.৬৫, ২০১৫ সালে ৯.৬৫ এবং ২০১৬ সালে ৮.৫৫ শতাংশ, যা থেকে বোঝা যায় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পেয়েছে।

‘এসডিজি-২০৩০ এবং ইউএস ডিকেড অব একশন ফর রোড সেফটি ২০১১-২০২০’ এর লক্ষ্য অর্জন অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর বেশকিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ