জশনে জুলুসে লাখো মানুষের ঢল


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২০ অক্টোবর, ২০২১ ৬:৫৫ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামসহ আশেপাশের ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী জেলা-উপজেলাগুলো থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি হামদ-নাত আর দরুদ মুখর পরিবেশে জশনে জুলুসে অংশগ্রহণ করেন। এবার প্রথমবারের মতো জুলুসে নেতৃত্ব দিয়েছেন হজরতুল আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ)।

আলমগীর খানকাহ্-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে বের হয় পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবীর (স.) জশনে জুলুস। জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়ক হয়ে বিবিরহাট, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট ঘুরে পুনরায় মুরাদপুর বিবিরহাট প্রদক্ষিণ করে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে ফিরে আসে জুলুসটি। এরপর মাহফিল শুরু হয়। সব শেষে করোনামুক্তি ও বিশ্বশান্তির জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হবে।

শিশু কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষে একাকার হয়ে গেছে চট্টগ্রামের রাজপথ। আখতারুজ্জমান ফ্লাইওভার, সড়কের দুই পাশ, ফুটওভার ব্রিজ, বাসাবাড়ির ছাদে শুধু মানুষ আর মানুষ। যেদিকে চোখ যায় শুধু পাঞ্জাবী টুপি পরিহিত মুসল্লিদের চোখে পড়ে।

প্রতিবছরের মতো এবারও জুলুসের শৃঙ্খলা রক্ষায় ভোর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্স, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে এবারের জুলুসে চট্টগ্রামের আশপাশের জেলা থেকে লোকজন আসতে নিরুৎসাহিত করেছিলেন আয়োজক কমিটি। জেলা সদরে স্থানীয়ভাবে তাদের জুলুস আয়োজনের জন্য বলা হয়েছিল। তবে এরপরও এসব এলাকা থেকে ছুটে এসেছেন কিছু মানুষ।

গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মোসাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, ‘জুলুস সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আনজুমানের নিজস্ব সিকিউরিটি ফোর্স ও স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে।

আনজুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জুলুস শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, আল্লামা তৈয়ব শাহ (র.) ৭৪ সালে এ জুলুসের প্রবর্তন করেন। আমরা এ জুলুস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের এবারের বার্তা হচ্ছে মানুষের প্রতি ভালোবাসা। করোনাকালে আপনারা দেখেছেন গাউসিয়া কমিটি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের দাফন কাফন ও সৎকারে সহযোগিতা করে আসছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও জুলুসের শৃঙ্খলা রক্ষায় ভোর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্স, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এসি (বায়েজিদ) মো. শাহ আলম বলেন, জুলুসকে ঘিরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত আছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে নগরের বলুয়ার দীঘি খানকাহ থেকে আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রহ.) এ জুলুসের সূচনা করেন। সেই থেকে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল এ জুলুস পালন করা হয়। করোনার কারণে গত বছর সীমিত পরিসরে আয়োজন করার কথা থাকলে তখনও নবীপ্রেমী মানুষের ঢল নামে।

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ