বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজ সমতায় দক্ষিণ আফ্রিকা


সকালের-সময়  ২০ মার্চ, ২০২২ ১১:২৫ : অপরাহ্ণ

স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের দেওয়া মাত্র ১৯৫ রানের মামুলি লক্ষ্য ১২.৪ ওভার এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় খেলায় জোহানেসবার্গে জিতে সিরিজে সমতায় ১-১ ফিরল প্রোটিয়ারা। শেষ ম্যাচেই নির্ধারিত হবে সিরিজ।

রোববার (২০ মার্চ) জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে স্বাগতিকদের কাছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছে তামিমবাহিনী। শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৬ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাভুমাবাহিনী।

এর আগে সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৮ রানে জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ, যা আবার প্রোটিয়াদের মাটিতে যেকোনো ফরম্যাটে টাইগারদের প্রথম জয়।
১৯৫ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক এবং জানেমান মালান। যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা খেই হারিয়ে ফেললেন, সেই উইকেটেই তারা হেসেখেলে ব্যাট করছিলেন।

অসুস্থতা কাটিয়ে সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা কুইন্টন ডি কক মাত্র ২৬ বলে ফিফটি তুলে নেন। ১৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ৪০ বলে ২৬ করা জানেমান মালানকে বোল্ড করে ৮৬ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন মেহেদি মিরাজ। ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠা অপর ওপেনার ডি কককে থামান সাকিব। তবে ৪১ বলে ৬২ রান করা ডি কককে ফেরানোয় বড় অবদান ডিপ মিডউইকেটের সীমানায় অসাধারণ ক্যাচ নেওয়া আফিফের।

কাইল ভেরেইনাকে নিয়ে আরও একটি জুটি জমিয়ে তোলেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। জয় থেকে ১৯ রান দূরে থাকতে বাভুমাকে (৩৭) শরীফুলের তালুবন্দি করেন আফিফ হোসেন। ভাঙে ৮২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। অন্যদিকে ৬২ বলে ফিফটি পূরণ করেন ভেরেইনা। শেষ পর্যন্ত ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৭৬ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জিতে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজে এলো ১-১ সমতা।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১৯৪ রান তোলে বাংলাদেশ। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডার্স স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামার সিদ্ধান্তটা দ্রুতই ভুল প্রমাণ করে দেন দুই প্রোটিয়া পেসার লুঙ্গি এনগিডি এবং কাগিসো রাবাদা। উইকেটে আছে বাড়তি বাউন্স। এই সুযোগে বল হাতে ঝড় তুলতে শুরু করেন এই দুজন। ফলে শুরু থেকেই বাংলাদেশ পড়ে বিপদে।

দলীয় ৭ রানে লুঙ্গি এনগিডির বলে তামিম ইকবাল (১) আউট হয়ে যান। গত ম্যাচে ঝড়ো ব্যাটিং করা সাকিব আজ পারেননি। ৬ বলে কোনো রান না করেই রাবাদার শিকার হন। ভরসা হয়ে ছিলেন লিটন দাস (১৫)। কিন্তু দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই ওপেনার আজ রাবাদার বলে বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে দেন। এরপর মুশফিকুর রহিম (১২) আর ইয়াসির আলী (২) দ্রুত আউট হয়ে গেলে মাত্র ৩৪ রানে পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ! এমন পরিস্থিতি থেকে হাল ধরার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ এবং আফিফ।

দুজনের জুটি বেশ জমে ওঠে। ৮৭ বলে ৬০ রানের এই জুটি ভাঙে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে্। তাবারিজ শামসির শিকার হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ৪৪ বলে ২৫ রান। দারুণ খেলতে থাকা আফিফের সঙ্গী হন মিরাজ। ২৮তম ওভারে দলের স্কোর তিন অংক স্পর্শ করে। ৭৯ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন আফিফ। ঘুরতে থাকে রানের চাকা। ব্যক্তিগত ২১ রানে ক্যাচ দিয়েও জীবন পান মিরাজ।

১১২ বলে ৮৬ রানের চমৎকার এই জুটির অবসান ঘটে আফিফের বিদায়ে। দলীয় ১৮০ রানে রাবাদার করা ৪৬তম ওভারে টেম্বা বাভুমার তালুবন্দি হন ১০৭ বলে ৯ চারে ৭২ রান করা আফিফ। একই ওভারে ফিরে যান মিরাজও। রাবাদাকে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন ৪৯ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ৩৮ রান করা এই অল-রাউন্ডার।

এর দ্বারাই পাঁচ উইকেট পূরণ হয়ে যায় রাবাদার। শরীফুলকে (২) ফেরত পাঠান ভ্যান ডার ডুসেন। শেষদিকে তাসকিনের ৯* রানে ৫০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৯৪ রান। ৩৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন রাবাদা। বাকি চার উইকেট চার বোলার ভাগ করেছেন।

স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ১৯৪/৯ (তামিম ১, লিটন ১৫, সাকিব ০, মুশফিক ১১, ইয়াসির ২, মাহমুদউল্লাহ ২৫, আফিফ ৭২, মিরাজ ৩৮, তাসকিন ৯*, শরিফুল ২, মুস্তাফিজ ২*; এনগিডি ১০-০-০-০, রাবাদা ১০-০-৩৯-৫, পার্নেল ২.৫-০-৬-১, বাভুমা ৬.১-০-২২-০, শামসি ১০-২-২৬-১, মহরাজ ১০-০-৫৭-০, ফন ডার ডাসেন ১-০-৩-১)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩৭.২ ওভারে ১৯৫/৩ (মালান ২৬, ডি কক ৬২, ভেরেইনা ৫৮*, বাভুমা ৩৭, ফন ডার ডাসেন ৮*; শরিফুল ৪-০-২৯-০, তাসকিন ৪-০-৪১-০, মিরাজ ১০-০-৫৬-১, মুস্তাফিজ ৩-০-১৩-০, সাকিব ১০-২-৩৩-১, আফিফ ৫-০-১৫-১, মাহমুদউল্লাহ ১.২-০-৮-০)

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ