মিতু হত্যা মামলা: আলোচিত তিন আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা


সকালের-সময় রিপোর্ট  ১২ জুলাই, ২০২১ ৯:১৪ : অপরাহ্ণ

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তিন আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

তিন আসামি হলেন- কামরুল শিকদার ওরফে মুছা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা ও মো. কালু। এদের মধ্যে মুছা ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ। আসামি কালু ঘটনার পর থেকে পলাতক। এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা জামিনে রয়েছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, মিতু হত্যার তিন আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। শুনানি শেষে আদালত তিন আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন।

তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা বলেন, গত ৫ জুলাই এজহারভুক্ত পলাতক তিন আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলাম। সোমবার শুনানি হয়েছে।

এদিকে বাবুল আক্তারের গ্রেপ্তারের পর থেকে তাকে জড়িয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিতে থাকেন মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার। তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, ঘটনার পর ১৬ দিন পর্যন্ত পরিবারের সাথে ছিল মুছা। তখন বাবুল আক্তার কয়েকটি ল্যান্ডফোন নম্বর থেকে মুছার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। এ সময় মুছাকে সাবধানে চলাফেরা করার পরামর্শও দেন বাবুল। ধীরে ধীরে সব সামলে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয় তাকে।

পান্নার দাবি, দুই ভাইকে আটকের পর খুবই ভেঙে পড়ে মুছা। এ সময় মুছা সব ঘটনা ফাঁস করে দেয়ার হুমকিও দেয় বাবুলকে। এক পর্যায়ে স্ত্রীর কাছে স্বীকার করে খুনের সাথে জড়িত থাকার কথাও।

মুসার স্ত্রীর দাবি, ২০১৬ সালের ২২ জুন নগরের কাটগড় থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে মুছাকে তুলে নেয়া হয়। যদিও মুছাকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে সে সময় গণমাধ্যমে মুখ খুলতে চাইলে বাবুলের ঘনিষ্ট দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ভয়ভীতি দেখান বলেও অভিযোগ করেন পান্না আকতার।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকাল ৭টা ১৭ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে প্রথমে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ওই সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

এ ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন বাবুল আক্তার। মামলাটি চট্টগ্রামের নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ৩ বছর ১১ মাস তদন্তে থাকার পর গত বছরের মে মাসে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপর মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় এজাহার করেন।

এজাহারে সাবেক এসপি মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার, কিলিং স্কোয়াডের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু, ওরফে কসাই কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যা ও শাহজাহান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে।

যদিও এদের মধ্যে দু’জন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন এবং বর্তমানে জেলে আছে দু’জন। পুলিশের মতে, নিখোঁজ রয়েছেন কিলিং স্কোয়াডের নেতৃত্বদানকারী মুসা।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ