নুরজাহান গ্রুপের এমডিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা 


নিজস্ব প্রতিবেদক ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১:০৯ : পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে ৪ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ শোধ না করায় নুরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জহির আহমেদসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। এই আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে সব আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ও পুলিশের বিশেষ শাখায়।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদেশে উল্লেখ করা হয়, জহির আহমেদ, তাসমিন মনোয়ার প্রকাশ তাসমিন আহমেদ, টিপু সুলতান, জসিম উদ্দিন, ইফতেখার আল জাবের এবং মোহাম্মদ ফরহাদ মনোয়ারের বিরুদ্ধে গত ৮ সেপ্টেম্বর ৪৬৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ শোধ না করায় সাউথইস্ট ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ মাসের সাজা দেওয়া হয়।

অপর মামলায় ৯ সেপ্টেম্বর ১৪২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করায় তাদের বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের সাজা দেওয়া হয়। ১২ সেপ্টেম্বর ১২০ কোটি টাকার আরেকটি মামলায় পাঁচ মাসের সাজা হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর ২৬৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ শোধ না করায় আরেকটি মামলায় পাঁচ মাসের সাজাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়।

আবার এদিকে নুরজাহান গ্রুপের চেয়ারম্যান, এমডি ও পরিচালকদের চারটি মামলায় সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট পাওনা ১০৯৫ কোটি টাকা। ওই আসামিরা ডিক্রি করা টাকা পরিশোধে একক এবং যৌথভাবে আইনগতভাবে বাধ্য।

আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ২০ মামলা বিচারাধীন। এসব মমালায় চার হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ খেলাপি। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি মামলায় জহির আহমেদের পাঁচ মাসের সাজা হয়। তাঁর দেশত্যাগ ঠেকানোর জন্য তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অফিসার ইনচার্জ বিশেষ শাখা বরাবর নিষেধাজ্ঞা আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে।

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ১১৮ কোটি ৫০ লাখ ৫১ হাজার ৮৮৮ টাকা খেলাপি হওয়ায় জহির আহমেদ রতন ছাড়াও তার বাবা আলহাজ আবদুল খালেক ও তার মা নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধেও দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

মামলার আদেশে আদালত জানান, ন্যাশনাল ব্যাংকের করা মামলার আসামি জহির আহমেদ রতন দেশের একজন শীর্ষ ঋণখেলাপি। এই জারি মামলাসহ অন্যান্য মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করেনি নূরজাহান গ্রুপ।

আদালত জানান, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বর্তমানে কানাডায় বসবাস করেন। এমডি গ্রেপ্তার এড়াতে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। তিনি যদি দেশ ত্যাগ করতে পারেন, তাহলে একাধিক ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

আদালত আরও জানায়, আসামির গৃহীত ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক না থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর তিন মাস অতিবাহিত হলেও ব্যাংকের কোনো টাকা পরিশোধ না করে তিনি পলাতক রয়েছেন।

আদালতের জুডিশিয়াল রেকর্ড অনুযায়ী, জহির আহমেদের বিরুদ্ধে এই আদালতে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ২০টির বেশি। তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দাবিকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ চার হাজার কোটি টাকার বেশি। কোনো মামলায় নুর জাহান গ্রুপ টাকা পরিশোধের সদিচ্ছার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সকালের-সময়/ফোরকান

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ