ভাসানচরে জাতিসংঘ প্রতিনিধির সামনে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ


সকালের-সময় রিপোর্ট  ৩১ মে, ২০২১ ৪:৫৯ : অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের দেখতে গেছেন জাতিসংঘের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। এসময় রোহিঙ্গারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। তারা বলেছেন, সেখানে থাকতে চান না, কষ্ট আছেন। কক্সবাজারের ক্যাম্পে ফিরতে চান। এসব দাবি জানিয়ে প্রতিনিধি দলের আশপাশে শ্লোগান দেন রোহিঙ্গারা।

এ সময় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। সোমবার সকালে প্রথমবারের মতো ভাসানচরে পৌঁছান ইউএনএইচসিআরের সুরক্ষা বিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার জিলিয়ান ট্রিগস ও অপারেশনস বিষয়ক সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজু।

রোহিঙ্গারা ভাসানচরে কেমন আছেন, তা দেখার জন্য যান ওই দুই কর্মকর্তা। কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া রোহিঙ্গারা ভাসানচরে গিয়ে কেমন আছেন সেটা জানা ও বোঝার চেষ্টা করবেন তারা। কিন্তু রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভে ক্যাম্পগুলো ঘুরে দেখতে পারেননি দুই হাইকমিশনার।

এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সকালে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি দল সেখানে পৌঁছলে রোহিঙ্গারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে রোহিঙ্গারা ইট পাটকেল ছোড়ে, ভাংচুর করে। এই মুহূর্তে এর বাহিরে কিছু বলা যাচ্ছে না।

ঘটনাটি স্বীকার করে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) খোরশেদ আলম খান বলেন, জাতিসংঘের প্রতিনিধি ভাসানচরে পৌঁছলে রোহিঙ্গারা তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। তবে সেখানে ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

ভাসানচরের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি গুচ্ছগ্রামের ‘ফোকাল’ (সমন্বয়ক) এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ভাসানচরে পৌঁছলে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় বিক্ষুদ্ধ রোহিঙ্গারা ইট পাটকেল ছোঁড়ে, একটি সরকারি কার্যালয়ে ভাংচুর চালায়। এতে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর শোনা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এখনো শান্ত হয়নি।

গত ডিসেম্বরে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচর স্থানান্তর শুরু হওয়ার পর এপ্রিল পর্যন্ত কয়েক দফায় প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে পৌঁছান। সরকারি কর্মকর্তাদের মতে সব রোহিঙ্গাই সেখানে স্বেচ্ছায় গেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। আগের ও তখনকার মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে বসবাস করছেন।

ওই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প নেয় সরকার। আশ্রয়ণ-৩ নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ