বাঁশখালীতে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন!


নিউজ ডেস্ক  ১০ জুন, ২০২৩ ১:৫৮ : পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সুলতান সিকদার পাড়ার ছনুয়ায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে পাষণ্ড স্বামী। এ ঘটনায় নির্যাতিত পারভিন আক্তার ৩১ মে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার সুলতান সিকাদার পাড়া ছনুয়া ইউনিয়নের আবদুল মন্নানের কন্যা পারভিন আক্তার (১৮) এর বিয়ে হয় বিগত ৬ মাস পূর্বে পার্শ্ববর্তী চরপাড়া ছনুয়া ইউনিয়নের আবদুল জব্বারের পুত্র মিজানুর রহমান (২৪) সাথে। বিয়ের ২/৩ মাস সংসার চলার পর পারভিন আক্তার এর গর্ভে আসে সন্তান। সে এখন পাঁচ মাসের গর্ভবতী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, সন্তান গর্ভে আসার পর যৌতুকের জন্য শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। বিগত ২৩ মে যৌতুকের টাকার জন্য পারভিন আক্তারকে পাষণ্ড স্বামী মিজান ও আমান উল্লাহ (৪৫), মাহফিলা বেগম (৪২), মরজান আক্তার (২১) ব্যবসার জন্য ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পাষণ্ড স্বামী মিজান পাঁচ মাসের গর্ভবস্থায় পারভিন আক্তারকে চুল ধরে টানা হেচড়া পূর্বক লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করতে থাকে।

২নং আসামী আমান উল্লাহ ঝাড়ু–দিয়ে ৩নং আসামী মাহফিলা বেগম জুতা দিয়ে ৪নং আসামী মরজান আক্তার কিল ঘুষি পেটে, মাথায় আঘাত করায় পারভিন আক্তারের পুরো শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। উক্ত আসামীগণের অমানুষিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে গুরুতর আহতবস্থায় জোরপূর্বক পারভিন আক্তারকে তার পিত্রালয়ে এক কাপড়ে পাঠিয়ে দেই।

পারভিন আক্তারের বাবা আবদুল মন্নান জানান, আমার মেয়ে বাড়িতে এসে নির্যাতনের ঘটনা আমাকে বলে। আমি বাড়ির লোকজন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে পরামর্শ করার পর আমার মেয়ে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ১ চট্টগ্রাম আদালতে ২২০/২০২৩নং ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ১১ (গ) ৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

উক্ত মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ১ আদালতের নির্দেশে বাঁশখালী আনসার ভিডিপির কাছে তদন্তাধীন আছে। বর্ণিত মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিরা সবাই একজোট হয়ে বাদিনীর পিতার বাড়িতে হামলা করে, মামলা তুলে না নিলে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে চিৎকার করতে থাকে। এই সময়ও পারভিন আক্তারের পরিবারের ঘরে থাকা আত্বীয়স্বজন প্রতিবাদ করলে আসামিগণ বাদিনীর পিতার ঘরে ঢুকে ঘরের রক্ষিত মালামাল ভাঙচুর করে এবং জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় বলে জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা যায়, আমানুল্লাহ ও হাশেম এর নেতৃত্বে ৭/৮জন আসামী পারভিন আক্তারের পরিবারের উপর হামলা করে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এই সময় বাদীর বাড়ীতে কোনো পুরুষ লোক না থাকায় বাদীর মা লুলু আক্তার, বোন কলেজ পড়ুয়া রাবিয়া ও ভাই কলেজ পড়ুয়া আরকান ইসলামকে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা এবং মারত্মকভাবে জখম করে, আহতরা বাঁশখালী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

বর্তমানে পাঁচ মাসের গর্ভবতী অসহায় ভিকটিম পারভিন আক্তার আইনের আশ্রয় নেয়ায় আসামীদের ভয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। উক্ত ঘটনায় বাঁশখালী থানায়, লুলু আক্তার বাদী হয়ে এজাহার জমা দিয়েছে।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ