অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের পর আলোচনায় থাকা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে কক্সবাজার জেলা থেকে বদলি করা হয়েছে। তাকে রাজশাহীর পুলিশ সুপারের দায়িত্ব দিয়ে কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে আনা হয়েছে মো. হাসানুজ্জামানকে যিনি ঝিনাইদহে একই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের কাছে বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা। ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য দুই সঙ্গীকে নিয়ে তিনি কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সেই সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।
ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের কথা জানিয়ে সিনহার দুই সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করে দুটো মামলাও দায়ের করে পুলিশ কিন্তু পুলিশের দেওয়া ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ আগস্ট উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগগুলোও নতুন করে আলোচনায় আসতে শুরু থাকে। সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ অগাস্ট কক্সবাজারের হাকিম আদালতে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ঐ মামলার আসামি বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সহ সাত পুলিশ সদস্য পরে আদালতে অত্মসমর্পণ করেন। তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়। সেই সময় কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠে বিভিন্ন মহল থেকে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের সংগঠন রাওয়া’র নেতারা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট- বিএফআইউ গত ১৮ আগস্ট এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সহ আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দেয়। কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে সিনহা হত্যা মামলায় আসামি করতে আদালতে আবেদনও করেছিলেন তার বোন, তবে বিচারক তা খারিজ করে দেন।
এসএস