সুইফার যখন ডাক্তার, গণশুনানিতে কোহিনুর


২১ মার্চ, ২০১৯ ৬:৪৪ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট:: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সুইপারের কাজ করেন মহিউদ্দিন। তবে তিনি রোগীকে ইনজেকশনও পুশ করেন, প্রয়োজনে অন্যান্য সেবাও দেন। কিন্তু ওই যুবককে নার্স কিংবা চিকিৎসকের কাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষের অজান্তেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন মহিউদ্দিন। বিনিময়ে আদায় করতেন বাড়তি টাকা। বুধবার সকালে হাসপাতালে গণশুনানিতে মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে রোগীকে ইনজেকশন পুশের অভিযোগ তোলেন রোগীর স্বজন কোহিনুর আকতার।

কোহিনুর আকতার বলেন, গত শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগে আমার মা শাকেরা বেগমকে ভর্তি করাই। ভর্তির দিন মহিউদ্দিনকে ওয়ার্ডের মেঝে পরিস্কার করতে দেখেছি। এরপর সোমবার দুপুরে তিনি আমার মায়ের হাতে ইনজেকশন পুশ করেন। এতে হাতটি ফুলে যায়। এ গণশুনানিতে রোগীর স্বজন কক্সবাজারের পেকুয়ার ওয়াহিদুল ইসলাম এক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তোলেন।

তিনি বলেন, ছয় নম্বর ওয়ার্ডে ওষুধ দিতে গেলে গেটম্যানের দায়িত্ব পালনকারী আনসার সদস্য টাকা ছাড়া প্রবেশে বাধা দেন। টাকা না দেওয়ায় খারাপ ব্যবহার করেন। পরে কয়েকজন আনসার সদস্য আমাকে ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন।`
গণশুনানিতে ফেনীর সোনাগাজীর হেদায়েতুল ইসলাম অভিযোগ করেন, হাসপাতালের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের গেটম্যান টাকা ছাড়া প্রবেশ করতে দেননি। পরে টাকা দিলে ঢুকতে দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মচারী হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অবাধে যাতায়াত বন্ধের দাবি জানান। চকবাজার কাতালগঞ্জের মো. শহিদল্লাহ বলেন, খাদ্য বিভাগে কর্মরত মো. আইয়ুব ও মো. মিজান হাসপাতাল থেকে চুরি করে মাছ-মাংস বাসায় নিয়ে যান। শুনানি চলাকালেই অভিযুক্ত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আজমকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানান ওয়ার্ড মাস্টার রাজীব কুমার দে।

উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম জানান, অভিযোগগুলোর তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী হাসপাতালের সুনাম নষ্টের চেষ্টা করছেন। কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

গণশুনানিতে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম, মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজল কান্তি দাশ, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. শাহজাহান, হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া, সেবা তত্ত্বাবধায়ক শিপ্রা চৌধুরী, ওয়ার্ড মাস্টার রাজীব কুমার দে, আনসার কমান্ডার মো. আবুল কাসেম উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ