বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই হেফাজতের সাথে ‘সম্পৃক্ত’: ফখরুল


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২৩ এপ্রিল, ২০২১ ১২:৪৪ : পূর্বাহ্ণ

বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই হেফাজতে ইসলামে ‘সম্পৃক্ত’ বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হেফাজতকেন্দ্রিক সাম্প্রতিক সহিংসতায় বিএনপিকে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই জবাব দিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে।

২৬ মার্চের পর থেকে গত কয়েকদিনে বোধহয় কয়েক হাজার গ্রেপ্তার করে ফেলেছে এবং শুনলে অবাক হবেন আমাদের চট্টগ্রাম, ব্রাক্ষবাড়ীয়া, ঢাকায় দলের কর্মীরা তারা রাতে বাসায় থাকতে পারে না। ব্লক রেইড করছে, কেরানীগঞ্জে ব্লক রেইড করে আমাদের নেতাকর্মীদের অ্যারেস্ট করছে। কিছু বলতে গেলেই তারা বলে যে হেফাজতের সাথে সম্পৃক্ত আছে।

তিনি বলেন, আরে হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত তো আপনারা। আপনারা বসে, প্রধানমন্ত্রীর বাসায় বসে মিটিং করে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে চুক্তি করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে কওমি মাতা হিসেবে উপাধি দেওয়া হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো সরাসরি বলে ফেলেন এত কোটি টাকা দিয়েছি, আমরাই একমাত্র কাজ করছি। আর তো কেউ কাজ করছে না-এসব কথা বলেন। দায়িত্ব তো আপনারাই নিয়েছেন। দায়িত্ব তো পালন করতে হবে আপনাদেরই। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আপনারা প্রতি পদে পদে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। আপনারা জনগণের সমস্ত আস্থা হারিয়েছেন, বিশ্বাস হারিয়েছেন। এখন অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেছেন। দেশটাকে একটা পু্লিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।

গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে কয়েকটি বাম সংগঠন এবং হেফাজতে ইসলামের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এখানে যে কোনো সংগঠনে, যেকোনো রাজনৈতিক দলের যে কোনো প্রতিবাদ করা তো তাদের অধিকার, এটা তার সংবিধান সম্মত অধিকার।

আপনি গণতন্ত্রের কথা বলবেন অথচ কাউকে প্রতিবাদ করতে দেবেন না, আপনি কাউকে কথা বলতে দেবেন না, অন্যায়গুলোকে তুলে ধরতে দেবেন না, ভুলগুলোকে চিহ্নিত করতে দেবেন না। তাহলে কীভাবে একটা সরকার চলতে পারে। যেটা তো আর যাই হোক গণতান্ত্রিক সরকার হতে পারে না।

করোনা মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনায় এখন আমাদের আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো কিছু করার নেই। ভ্যাকসিন প্রথমবার যারা নিয়েছেন, তারা দ্বিতীয়বার সবাই ভ্যাকসিন পাবেন কিনা তা আমি জানি না। কারণ যা শুনতে পাচ্ছি যে, ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিচ্ছে।

একজন কিছুদিন আগে বলেছেন যে, একটামাত্র দেশের ওপর এই যে নির্ভর করে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা-এটাও তো একটা ক্রিমিনাল অফেন্স। আপনাকে একটা সরকার চালাতে হলে অনেক পথ খোলা রাখতে হবে। আপনি চীনকে বলে দিলেন যে, না তোমার এটা আমার দরকার নেই, ফেরত দিয়ে দিলেন।

তিনি বলেন, আপনারা ভারত থেকে নেয়া শুরু করলেন। তাও আবার অনেক বেশি দামে তাও ব্যক্তি মালিকানায় একজন ব্যবসায়ীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য তার কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন আপনি নিচ্ছেন। এটা গর্ভনমেন্ট টু গর্ভনমেন্ট নেয়া যেত। অন্যান্য দেশগুলো নিচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘একটি পথ বের করার’ আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, ‘করোনা সমস্যা মোকাবিলা জনগণকে নিয়ে করতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এটা করার কোনো উদ্যোগ নেই। বিদেশীদের আহ্বান জানাচ্ছি অথচ দেশের ভেতর আমরা জাতীয় ঐক্য করতেছি না।

জেএসডির উদ্যোগে ‘করানো মোকাবিলায় স্থানীয় সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মূল প্রস্তাব উপস্থাপন করেন দলটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

আসম আবদুর রবের সভাপতিত্বে ও শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও ফারাহ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজমুদার, জেএসডির কার্যকরী সভাপতি মো.সিরাজ মিয়া, আকম আনিসুর রহমান খান কামাল, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন তালুকদার, সহসভাপতি তৌহিদুল হোসেন বক্তব্য রাখেন।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ