আজও মুখোমুখি দুই দল, দেশজুড়ে উৎকণ্ঠা


নিউজ ডেস্ক  ৪ মার্চ, ২০২৩ ১১:৫০ : পূর্বাহ্ণ

বিভাগ-জেলা-ইউনিয়নের পর শনিবার সারাদেশে থানা পর্যায়ে পদযাত্রা করবে বিএনপি ও সমমনা জোটগুলো। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপি ও ‘সরকার-বিরোধী’ রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক আন্দোলনের অষ্টম কর্মসূচি এটি।

একইদিনে ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি থানায় শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এসব সমাবেশে সরকারে থাকা দলটির কর্মসূচিতে মহানগরের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারা যোগ দিবেন বলে জানান আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপ্পি ও দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে থানায় থানায় সমাবেশের এ কর্মসূচির কথা জানানো হয়। সরকার হটাতে বিএনপি ও সমমনা জোট গত দুই মাস ধরে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে।

বিভাগ-জেলা-ইউনিয়নের পর শনিবার দেশজুড়ে থানা পর্যায়ে পদযাত্রা করবে বিএনপি ও সমমনা জোটগুলো। অপরদিকে বিরোধী দলের কর্মসূচির সময়কালে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করছে। তবে দলের নেতারা একে পাল্টা কর্মসূচি বলছেন না।

উত্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিটি থানায় শান্তি সমাবেশের অংশ হিসেবে মিরপুর ১ নং গোল চক্কর বাস স্টপেজের খলিল ভবনের সামনে বিকাল তিনটায় শান্তি সমাবেশ হবে। এতে থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনের সমাবেশে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উত্তরা আজমপুরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মধ্যবাড্ডা ইউলুপের সামনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম উপস্থিত থাকবেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, শাহজাহানপুর এলাকায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও কার্যনিবাহী সদস্য মো. সাঈদ খোকন; ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুর এলাকায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম অংশ নেবেন।

অপরদিকে লালবাগ, চকবাজার, কোতয়ালি, বংশালে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন; যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় বন পরিবেশ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন; মুগদা, সবুজবাগ, খিলগাঁওয়ে দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু; কলাবাগান, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট ও ধানমণ্ডিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস এবং শ্যামপুর ও কদমতলি এলাকায় কেন্দ্রীয় সদস্য সানজিদা খানম উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে গত ২৩ ডিসেম্বর গণমিছিলের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলগুলো যুগপৎ কর্মসূচি শুরু করে। এর আগে ১০ ডিসেম্বর দেয়া বিএনপির ১০ দফা দাবিতে দলগুলোর সমর্থনের কথা বিভিন্ন সমাবেশে বলেছেন জোট নেতারা। এর প্রেক্ষিতে গত আড়াই মাসে সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিভাগীয় সমাবেশ করেছে তারা।

এর ধারাবাহিকতায় ১১ ফেব্রুয়ারি ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং সবশেষ ১৮ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি করে বিএনপিসহ তাদের সমমনা জোটগুলো। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার সারাদেশের সব থানায় পদযাত্রা হবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এতে অংশ নেবেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সবগুলো থানায় পদযাত্রা হবে। এসব পদযাত্রায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা থাকবেন। এছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট আলাদাভাবে ঢাকায় পদযাত্রা করবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁ পর্যন্ত নীবর পদযাত্রা করবে। এদিকে ১২ দলীয় জোট সকাল ১১টায় বিজয় নগর পানির ট্যাংকের কাছে সমাবেশ করবে। পরে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড়, কালবার্ট সড়ক ঘুরে আবার পানির ট্যাংকে গিয়ে শেষ হবে।

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটও এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সকাল ১১টায় বিজয় নগরে আল-রাজী কমপ্লেক্সের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ঘুরে কাকরাইলে মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। এলডিপি রাজধানীর পান্থপথ, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ীতে পদযাত্রা করবে বিকাল ৩টায়।

এছাড়া সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট বেলা ১১টায় পুরানা পল্টনে মোড়ে থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর কমলাপুরে গোলাপবাগ মাঠে ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন।

এতে ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮- খ, গ ও ঘ’এর আলোকে দল নিরপেক্ষ একটি অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের সাত সংসদ সদস্য পদত্যাগও করেন। পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। এ সরকারের অধীনে বিএনপি সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে অংশ নেবে না, তাও নেতাদের বক্তব্যে অনেকটাই ‘স্পষ্ট’।

বিএনপির এসব কর্মসূচির দিনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও নিজেদের মত কর্মসূচি পালন করছে। একই দিনের এসব কর্মসূচি ঘিরে ‘হামলার পাল্টাপাল্টি’ অভিযোগও রয়েছে। শনিবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মহানগরের সব থানায় শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে; দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও সেখানে উপস্থিত থাকবেন।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ