বিষয় :

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ


নিউজ ডেস্ক  ৪ মে, ২০২৩ ১১:১৫ : পূর্বাহ্ণ

আজ বৃহস্পতিবার (৪ মে) শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা সাড়ম্বরে উদযাপন করবে। এ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশজুড়ে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বুদ্ধ পূজা, প্রদীপ প্রজ্বলন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, প্রভাত ফেরি, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও বুদ্ধ পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও মানব জাতির সর্বাঙ্গীণ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ এ অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বোধিপ্রাপ্তি আর মহাপরিনির্বাণের স্মৃতি বিজড়িত দিনটিকে বুদ্ধ পূর্ণিমা হিসাবে পালন করেন বুদ্ধভক্তরা।

বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এ দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) নাম দেওয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’। ২০২০-২০২১ সালে করোনাভাইরাসের কারণে এ দিনটি উৎসবের মধ্যদিয়ে উদযাপন করতে পারেননি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। তবে এবার করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসায় দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা সাড়ম্বরে উদযাপন করবেন।

আজ দিবসটি উপলক্ষে দেশজুড়ে বিভিন্ন বৌদ্ধবিহারে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর বাসাবো ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারেও বুদ্ধপূজা ও শীলগ্রহণ, পি-দান, ভিক্ষু সংঘের প্রাতরাশসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে দিনটি পালন করা হবে। বৈশাখের পূর্ণিমা তিথিতে এ পূণ্যোৎসবে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা স্নান করেন, শুচিবস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত থাকেন। অর্চনার পাশাপাশি তারা পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেত প্রার্থনা করেন।

এদিকে, দিবসটি উলপক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটির দিন। এ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’ উপলক্ষে আজ বিকেলে বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য এক সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন। গৌতম বুদ্ধের জন্মদিন বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে প্রেসিডেন্ট এবং তার পতœী ড. রেবেকা সুলতানা বিকেল চারটায় শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এ সময় উপস্থিত থাকবেন। আট শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথি সহ প্রায় ১৬০০ এর অধিক লোক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বঙ্গভবনের একটি সূত্র একথা জানিয়েছে। সেখানে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, বিদেশী কূটনীতিক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশী মিশনের প্রধানগণ ও উপস্থিত থাকবেন।

ধর্মীয় সঙ্গীত ও গানের সাথে প্রেসিডেন্ট বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারাও প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন। প্রেসিডেন্ট এ উপলক্ষে একটি সংক্ষিপ্ত ভাষণও দেবেন। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ২৫৫৯ বছর আগে এই দিনে ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাব হয়েছিল।

যুবরাজ সিদ্ধার্থ গৌতম ৫৬৩ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে নেপালের লুম্বিনীতে পূর্ণিমার দিনে জন্মগ্রহণ করেন। বুদ্ধ হিসাবে বোধগয়ায় ছয় বছর কঠোর ধ্যানের পর সর্বোচ্চ জ্ঞান লাভ করেন তিনি। এবং একই দিনে ভারতের কুশিনগরে মৃত্যুবরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধ আজীবন মানুষের কল্যাণে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংসা, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করেছেন। শান্তি ও সম্প্রীতির মাধ্যমে আদর্শ সমাজ গঠনই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য।

বুদ্ধ সত্য ও সুন্দরের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবজগতকে আলোকিত করতে কাজ করে গেছেন। মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার জীবনাদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ