মাসুম সিন্ডিকেট–জিম্মি পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিস!


নিজস্ব প্রতিবেদক ২ আগস্ট, ২০২২ ২:২২ : পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি-হয়রানি ও ভোগান্তির অন্তহীন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এই অফিসের অনিয়ম কিছুতেই থামছে না। দিন দিন বাড়ছে ভোগান্তি। অনিয়ম দুর্নীতি যেন পাচঁলাইশ পাসপোর্ট অফিসের চিরচেনা বন্ধু। পদে পদে টাকা গুনতে হয় পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ মানুষদের। এরপরও ভোগান্তির শেষ নেই।

পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিস কর্মকর্তা ও দালাল সিন্ডিকেটের দাপটে চরম ভোগান্তির শিকার পাসপোর্ট প্রার্থীরা। ওপেনসিক্রেট এই অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের নেতৃত্বে রয়েছে এই অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মাসুম হাসান। তার নেতৃত্বেই এখানে সব হয়। বছরের পর বছর ধরে চলা অনিয়ম- দুর্নীতি আর দালাল সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি এই অফিস।

মাসুম হাসান ও তার সিন্ডিকেটের সৃষ্ট আইন ইচ্ছাকৃত অনিয়ম বিতর্কিত করছে নাগরিক অধিকার। ভিতরে ভিতরে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছে ভোগান্তি শিকার সাধারণ মানুষ।

পাসপোর্ট করতে আসা এক ভুক্তভোগী জানান, সাধারণভাবে পাসপোর্ট জমা দিতে আসলে তারা বিভিন্ন অজুহাতে বিভিন্ন ভুল ধরে বের করে দেন। কাগজপত্র জমা দিতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাগজপত্রে ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন

কিন্তু–দালালের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দিলে কোনো সমস্যা হয় না, এতো ফর্মালিটি ম্যান্টেন্ড করতে হয় না। তিনি মনে ক্ষোভ নিয়ে হয়রানীর ভয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে এক দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফরম জমা দিয়েছেন।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, এই পাসপোর্ট অফিসে দালাল ছাড়া ভোগান্তির শেষ নেই। টাকা দিয়ে দালাল ধরে করলে ভুলভ্রান্তি থাকলেও সমস্যা হয় না। দালাল ছাড়া করলে সব সমস্যা বের হয়ে আসে। আসলে এসব দেখার কেউ নেই। স্বাধীন দেশে এইসব দালাল, দুর্নীতিবাজদের স্থান আল্লাহ কোথায় রাখছে জানি না।

অভিযোগ রয়েছে- পাসপোর্ট করার জন্য নিজে সব কিছু করে নিয়ে গেলে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা “এই ভুল-সেই ভুল” ধরে হয়রানি করেন। তাই ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে অনেকেই দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করাচ্ছেন। আর এরই সুযোগে পাসপোর্টের জন্য ব্যাংক ড্রাফট বাবদ বাড়তি ২ থেকে তিন হাজার টাকা নিচ্ছে মাসুম সিন্ডিকেট।

তবে, এই বাড়তি টাকা থেকে পাসপোর্ট প্রতি মোটা অংকের টাকা চলে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে। পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী বাড়তি আয়ের লোভে দালালদের সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন বলেও জানান সেবাপ্রার্থীরা।

তারা জানান–পাসপোর্ট অফিস ঘিরে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা মাসুম হাসানের যোগসাজশে দালাল চক্র গ্রাহকদের জিম্মি করে রেখেছেন। দালাল ছাড়া পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা ও পাসপোর্ট পাওয়া কঠিন। গ্রাম থেকে আসা লোকজনও ভোগান্তিতে পড়ছেন।

সূত্র জানান, পাসপোর্টের আবেদনপত্রে দালালদের বিশেষ সাংকেতিক চিহ্ন না দেখলে আবেদন জমা নিতে চান না কর্মচারীরা। নিয়ম মেনে আবেদন করতে গেলে দিনের পর দিন শুধু ঘুরতে হয়।

এ প্রসঙ্গে পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মাসুম হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকালের-সময়কে অনিয়ম-দুর্নীতির কথা স্বীকার করে বলেন, আপনি যা পেয়েছেন তা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন, আবার এক পর্যায়ে অফিসে গিয়ে কথা বলার জন্য প্রতিবেদকে অনুরোধ করেন।

প্রিয় পাঠক–এই অফিসের উপপরিচালক মাসুম হাসানের জায়গা-জমি, ফ্ল্যাট বাড়ি, ও ব্যাংক ব্যালেন্স এর ফিরিস্তি দ্বিতীয় পর্বে দেখুন…..ধন্যবাদ।

সকালের-সময়/ফোরকান

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ