বাংলাদেশ নিয়ে ‘আরএসএফ’ অসত্য ও মনগড়া রিপোর্ট করে: তথ্যমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক ৫ মে, ২০২২ ১১:৫০ : অপরাহ্ণ

রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের (আরএসএফ) বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, তাদের প্রতিবেদন বিদ্বেষপ্রসূত, আপত্তিকর এবং অগ্রহণযোগ্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে তথ্যমন্ত্রী তার চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে এ বিষয়ে তাদের প্রশ্নের জবাবে তার প্রতিক্রিয়া জানান।

প্যারিসভিত্তিক সংস্থা আরএসএফ সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা গতবছর এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে প্রচণ্ড আপত্তিকর মন্তব্য ছিল। তারা বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়েও অসত্য ভুল এবং মনগড়া রিপোর্ট করে। সেটার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বৃহত্তর সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো যেমন প্রতিবাদ জানিয়েছিল, একইভাবে প্যারিস প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশি ফ্রান্সের আইনজীবির মাধ্যমে আরএসএফের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ দিয়েছিল।

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে এক বছরের ব্যবধানে আরও পেছাল বাংলাদেশ। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের (আরএসএফ) এবারের প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে দশ ধাপ অবনমন ঘটেছে বাংলাদেশের।

ইউনেস্কোর উদ্যোগে ৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হয়। ২০২২ সালের এই দিবস ধরে তথ্য প্রবাহ অবাধ করার লক্ষ্যে কাজ করে আসা আরএসএফ এই বছরের সূচক মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে।

প্রকাশিত সূচকে দেখা যায়, ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬২তম (স্কোর ৩৬ দশমিক ৬৩)। সূচকের চূড়ায় রয়েছে নরওয়ে। এ ছাড়া চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে একজন সাংবাদিক নিহত এবং তিনজন কারাবন্দি রয়েছেন।

বিশ্বব্যাপী কাজ করা প্যারিসভিত্তিক স্বাধীন এই সংগঠনটির ২০২১ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫২তম, স্কোর ছিল ৫০ দশমিক ২৯। তার আগের বছর অবস্থান ছিল ১৫১তম। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নিচে আছে কেবল মিয়ানমার। দেশটি ১৭৬তম স্থানে রয়েছে।

আরএসএফের প্রতিবেদনের সমালোচনা করে হাসান মাহমুদ বলেন, ‘সেই আইনি নোটিশে বলা ছিল, তারা কোনো দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের ব্যাপারে এরকম মন্তব্য করতে পারে না, ফ্রান্সের আইনেই সেটি বলা আছে, অর্থাৎ তারা ফ্রান্সের আইন লঙ্ঘন করে সেটা করেছে। সুতরাং তারা এখন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এটিও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, এটি আপত্তিকর এবং বিদ্বেষপ্রসূত।

যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে সেই সমস্ত সূত্র থেকে আরএসএফ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরএসএফ নিজেরাও বাংলাদেশের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে যে রিপোর্ট দেয় সেটির কোনো মূল্য নেই। স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিতে হবে তারা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।’

ডিজিটাল বা সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়েও আরএসএফ কথা বলেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডিজিটাল বিষয়টি যখন ছিল না তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টিও ছিল না। যখন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল বিষয়টি এসেছে, তখন গণমানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ আইন করেছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই আইন হয়েছে এবং হচ্ছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে নানা মহলের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, এই আইন সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এবং এই আইনের সুযোগ গ্রহণ করে অনেক সাংবাদিকও। সাংবাদিক হোক, সাধারণ মানুষ হোক.. কারও বিরুদ্ধে এই আইনের অপব্যবহার হওয়া উচিত নয়। সে নিয়ে আমরা সতর্ক আছি।

এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির পর এবার যেভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশের মানুষ ঈদ করেছে সেটি অভাবনীয়। শুধু তাই নয়, এ বছর দেশের মানুষ যেভাবে কেনাকাটা করেছে, সমস্ত ব্যবসায়ীরা প্রচণ্ড খুশি এবং দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে। এবার দেশে ঈদযাত্রা অনেকটা ভোগান্তিহীন ছিল। মানুষের মধ্যে এখনও খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ ভালোভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারছে না-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব সম্ভবত অন্য গ্রহে বসবাস করেন অথবা তার মাথার মধ্যে অন্যদেশ ঘুরপাক খায়।

এজন্য আমার মনে হয় মির্জা ফখরুল সাহেবের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা দরকার। কারণ বয়স হলে অনেক ধরণের আবোলতাবোল কথা মানুষ বলে। তাদের ডাক্তারদের সংগঠন ড্যাব তার শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থের কিছু পরীক্ষা করতে পারে।

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ