পুলিশ হেফাজতে দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু  

চান্দগাঁও থানার ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা–তদন্তে পিবিআই


নিজস্ব প্রতিবেদক ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:০১ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) চান্দগাঁও থানায় হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা (৬৭) মারা যাওয়ার ঘটনায় থানার ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. বেগম জেবুন্নেছা এ আদেশ দেন। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলাটি রেকর্ড করার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই আদেশে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ।

মামলার আসামিরা হলেন, চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. খাইরুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান (৫২), মো. জসীম উদ্দীম (৩৭), মো. লিটন (৪৮), রনি আক্তার তানিয়া (২৬) ও কলি আক্তার (১৯)।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে চান্দগাঁও থানার ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত), দুই এএসআইসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশনাসহ পিবিআই মেট্রোকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা ২০১৮ সালে দুদকের উপ-পরিচালক পদ থেকে অবসর নেন। তিনি নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন এক কিলোমিটার এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। ওই এলাকায় তার জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জের ধরে গত ২৯ আগস্ট ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া নামে এক নারী।

মামলার শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ওইদিনই অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। তবে ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ নিজে গায়েব করে রাখেন। এতে করে মামলার বিবাদীরা মামলার বিষয়টি অবগত হতে পারেননি। মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখে মামলার বাদী সময়ের আবেদন করেন।

কিন্তু বাদী সময়ের আবেদন করার মধ্যেও আদালত দুই বিবাদীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরোয়ানাটি দ্রুত থানায় পৌঁছালে গত ৩ অক্টোবর রাতে শহীদুল্লাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। থানায় নেওয়ার পর যোগসাজশে ভুক্তভোগী শহীদুল্লাকে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লার মৃত্যু হয়।

এদিকে, এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানার দুই এএসআই মো. ইউসুফ ও সোহেল রানাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয় এবং তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন সিএমপি কমিশনার।

অন্যদিকে, মামলার সমন লুকিয়ে রাখার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেস্ট আাদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ক্যাশিয়ার পদে বদলি করা হয় এবং এক সদস্যের একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ