মেক্সিকান মাদকসম্রাট ‘এল চাপো’র ছেলে গ্রেপ্তার–সংঘর্ষে নিহত ২৯


আন্তর্জাতিক ডেস্ক  ৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ৫:০১ : অপরাহ্ণ

মেক্সিকোর মাদকসম্রাট হোয়াকিন ‘এল চাপো’ গুজম্যানের ছেলে অভিদিও গুজম্যানকে গ্রেপ্তার ঘিরে মাদক ব্যবসায়ী চক্র ও সেনা সদস্যের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ২৯ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য সিনালোয়ায় এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুইস ক্রেসেনসিও সানদোভাল এসব কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, কারাবন্দী মাদকসম্রাট এল চাপোর ৩২ বছর বয়সী ছেলে অভিদিওকে গত বৃহস্পতিবার দিনের শুরুর দিকে গ্রেপ্তার করে মেক্সিকোর নিরাপত্তা বাহিনী। এ নিয়ে কয়েকঘণ্টা জ্বালাও-পোড়াও এবং মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্যদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

সানদোভাল বলেন, অভিদিওকে যে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে সরিয়ে আনা হয়েছে। এরপর তাঁকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থাসম্পন্ন কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিনালোয়া রাজ্যে ‘সিনালোয়া কার্টেল’ নামে মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন এল চাপো। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ছেলেরাই সেটার দেখভাল করে আসছিলেন।

অভিদিওকে গ্রেপ্তারে শক্তিশালী সিনালোয়া কার্টেলের সদস্যদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সিনালোয়ার রাজধানী কুলিয়াকানের ভেতরে ও বাইরে তাঁরা ব্যাপক ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, বৃহস্পতিবারের ওই অভিযানে আরো ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর সংঘর্ষের ঘটনায় বেসামরিক কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর বলেছেন, অভিদিওকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের তাৎক্ষণিক কোনো পরিকল্পনা নেই।

অভিদিওর বাবা এল চাপো যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থাসম্পন্ন একটি কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। তাকে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি নিউইয়র্কের একটি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। লোপেজ ওব্রাদর বলেন, মামলার কাগজপত্র আদালতে উত্থাপন করা হবে। মেক্সিকোর বিচারকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন। এটা একটা প্রক্রিয়া… এটা কেবলই একটা অনুরোধ নয়। অভিদিওকে গ্রেপ্তারে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বাহিনী সাহায্য করেনি।

মাদক পাচারের অভিযোগে কয়েক বছর ধরে অভিদিওকে হস্তান্তরের দাবি জানিয়ে আসছে প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্র। তাকে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ২০২১ সালে ঘোষণা দেয় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

অভিদিও এর আগে ২০১৯ সালেও একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু গ্রেপ্তারের পর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে আরো প্রাণহানি এড়াতে প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওব্রাদরের নির্দেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

সকালের-সময় ডটকম

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ