সিডর-আয়লা থেকেও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে আম্পান


সকালের-সময় রিপোর্ট  ১৯ মে, ২০২০ ৯:০৮ : অপরাহ্ণ

প্রবল শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলী অঞ্চলের দিকে এগিয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আম্পান। বুধবার (২০ মে) দুপুরের দিকে বাংলাদেশের হাতিয়াসহ উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে আম্পান।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ২০০৯ সালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া আয়লা কিংবা ২০০৭ সালের সিডর থেকেও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে আম্পান। সেসময় প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বয়ে গিয়েছিল আয়লা। দুই ঝড়েই বাংলাদেশে ব্যাপক প্রাণহানিসহ ক্ষয়ক্ষতি হয়।

তবে এবারের পূর্বাভাস অনুযায়ী আম্পান যখন স্থলভাগে আঘাত হানবে সে সময় ঝড় বইতে পারে ১১০ থেকে ১৩০ কিমি বেগে। ফলে স্বভাবতই উদ্বিগ্ন শহরবাসী থেকে প্রশাসন। সে মুহূর্তে উপকূলবাসী  কীভাবে মোকাবিলা করবে তা সময় বলবে। কারণ উপকূলবাসীর বড় সমস্যা মাটির ঘর, পুরনো ভবন, বিশালাকার হোর্ডিং।

পুরো বিষয়ের ওপর নজর রাখছে বাংলাদেশের করপোরেশনের বিপর্যয় মোকাবিলা দল। পর্যাপ্ত গ্যাস কাটার, করাত, আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি মজুদ করতে শুরু করেছে তারা। এছাড়া বুধবার সকাল থেকেই উঁচু ভবনের বাসিন্দাদের নামিয়ে আনা হতে পারে।

আবহাওয়া দপ্তর থেকে আরও বলা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি বঙ্গোপসাগরে আরও শক্তি বৃদ্ধি করে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। তীব্র গতিতে পশ্চিমবাংলা ও বাংলাদেশের দিকেই ধেয়ে আসছে। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টির অবস্থান উড়িষ্যার পারাদ্বীপ থেকে প্রায় ৪২০ কিমি, পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে প্রায় ৫৫০ কিমি দূরে।

বুধবার যখন বিকেল বা সন্ধ্যায় সুন্দরবনের গা ঘেঁষে অতিক্রম করবে তখন আম্পানের গতি কমে ঘণ্টায় ১৬৫ থেকে ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। আর সে সময় ঝড়ের গতিবেগ ১১০ থেকে ১৩০ কিমি থাকতে পারে।

আম্পানের জেরে মঙ্গলবার বিকেলের পর সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে ঝড়বৃষ্টির পরিমাণ অনেকটা বাড়বে। উপকূল এলাকার জেলাগুলির কিছু অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। জমবে পানি। হবে বন্যা।

প্রতি মুহূর্তে আম্পানের গতিবিধির ওপর নজর রেখে চলেছে আবহাওয়া দফতর। ফলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস জানান দিচ্ছে,  বাংলাদেশের কাছে এক ভয়ঙ্কর অশনিসংকেত এই আম্পান।

বাংলাদেশে আম্পানের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়। অন্যদিকে নিচু এলাকায় সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৯৫ কিমি বেগে আছড়ে পড়তে পারে আম্পান। পূর্বাভাস বলছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে উপকূলবাসী বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

এরই মধ্যে আম্পানের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হতে শুরু করেছে। কোমর বেঁধে নেমেছে সরকারের বিপর্য়য় মোকাবিলা বাহিনী। চলছে সতর্কতামূলক মাইকিং। আম্পানের সতর্কতায় সুন্দরবন এলাকাসহ প্রায় ৩ লাখ মানুষকে সরিয়ে সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতিটা জেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।

দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রশাসন সবরকমভাবে এই সাইক্লোনের জন্য তৈরি আছে। দেশের সবখানে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। এছাড়া  সরকারের বিভিন্ন টিম কাজ শুরু করেছে।

সকালের-সময়/এমএমএ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ