কোটি কোটি টাকা লোপাট, পিকে হালদারের ৩৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে ৫ মামলা


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ ৪:৪৯ : অপরাহ্ণ

প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মাথায় নিয়ে কানাডায় পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের ৩৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে পাঁচ মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নী‌তি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব ড. মু আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক সচিব বলেন, রোববার (২৪ জানুয়ারি) পিকে হালদারের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর রোববার একটি এবং সোমবার আরো চারটিসহ মোট পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৩ জনকে আসামি করা হয়। তিনি বলেন, এসব মামলায় বলা হয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে এ সব ব্যক্তি মোট ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা অবৈধভাবে আত্মসাৎ করেছেন।

এসব মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং বাের্ডের সদস্যরা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং করেছেন।

এর মধ্যে আনান কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা, সুখাদা প্রােপার্টিজ লিমিটেডের নামে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, মেসার্স বর্ণ’র নামে ৬৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, রাহমান কেমিক্যালস লিমিটেডের নামে ৫৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৮৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা মিলিয়ে পাঁচটি ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় মােট ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং হয়েছে।

আসামিরা পরস্পর যােগসাজশে এই ৩৫০ কোটি টাকা ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পরে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ওই অর্থ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গােপনপূর্বক পাচার করে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরােধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরােধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় শাস্তিযােগ্য অপরাধ করেছেন বিধায় দুদক পাঁচটি মামলা রুজু করেছে।

ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাশেম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাে. রাশেদুল হক, নয়জন বাের্ড মেম্বার, পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী, পিকে হালদারের আত্মীয়-স্বজন ও সহযােগীসহ মােট ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলায়।

এছাড়া পিকে হালদারের সহযােগীদের অর্থ লােপাটের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ৮৩ জন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ জনের হিসাবে ১০৫৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ফ্রিজ অবস্থায় আছে। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের এমডি, সিএফও-সহ ১০ জনের বিদেশযাত্রা রােধ করার জন্য ইমিগ্রেশনে চিঠিও দেয়া হয়েছে।

এদিকে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পিকে হালদারকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তার পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হককে দুদক কার্যালয়ে আনা হয়। বেলা ২টায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ