বিষয় :

জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে মন্টু-মান্নার উল্টো সুর


১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ৮:০৪ : অপরাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট:: ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের উল্টো কথা বলেছেন জোটের দুই নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ও মাহমুদুর রহমান মান্না। বৃহস্পতিবার মতিঝিলে কামাল হোসেনের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে তার গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মন্টু আর নাগরিক ঐক্যের মান্না বলেন উল্টো কথা। তাদের দাবি, ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত ছিল না। আর এই প্রসঙ্গটি গুরুত্বপূর্ণও নয়। ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে ছিলেন ড. কামাল হোসেনও। তবে তিনি গণমাধ্যমের সামনে আসেননি। উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সুলতান মোহাম্মাদ মুনসুরও।

ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা জেএসডির আ স ম আব্দুর রব বলেন, বিএনপি ঐক্যফ্রন্টে আছে, ছিল এবং থাকবে। ওনাদের একজন প্রতিনধি আসছে, রাস্তায় আছে। আমাদের প্রত্যেকেরই কাজ আছে, মামলা করতে হবে। এই জন্য আমরা ব্যস্ততার কারণে দেরি না করে চলে যাচ্ছি। জাতীয় সংলাপের তারিখ পেছানো হয়েছে জানিয়ে আ স ম রব বলেন, ‘আমাদের নেতা কামাল হোসেন বিদেশে যাবে চিকিৎসার জন্যে, ওনি ফিরে আসলে সম্ভবত আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংলাপ করব।

এর পর আমরা নাগরিক সংলাপে যাব, তারপর নাগরিক কমিটি করব। আমরা এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য স্তরে স্তরে আন্দোলন করব। এর মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। জামায়াতের বিষয়টির কোনো সুরহা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মান্না বলেন, ‘জামায়াত এখানে বড় ইস্যু হলো কীভাবে? বড় ইস্যু হলো ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখে ডাকাতি হয়ে গেল। তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। জামায়াতের সঙ্গে আমরা ছিলাম না, এখনো নেই। এটা আমাদের কাছে এতো প্রাধান্য পাচ্ছে না।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঐক্যফ্রন্ট যে নাগরিক সংলাপ করতে যাচ্ছে, সেটি ২৮ জানুয়ারি না হয়ে হবে ৬ ফেব্রুয়ারি। এই সংলাপে রাজনৈতিক সব দলকে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানান গণফোরামে ড. কামালের ডেপুটি মোস্তফা মহসীন মন্টু। জামায়াতের ধানের শীষ প্রতীকে যে প্রার্থীরা ছিলেন, তাদেরকেও ডাকা হবে কি না- এমন প্রশ্নে মন্টু বলেন, জাতীয় সংলাপেও জামায়াত থাকছে না। ঐক্যফ্রন্টে জামায়াত ছিল না, আগেও বলেছি, এখনও বলছি।

মন্টু জামায়াত প্রসঙ্গ এখন অস্বীকার করলেও গত ১২ জানুয়ারির সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গটিকে ইঙ্গিত করে পরোক্ষভাবে তিনি ভুল বলে উল্লেখ করেন। সেদিন কামাল হোসেন বিএনপির সঙ্গে তার জোটের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি যখন ঐক্যে সম্মতি দিয়েছি তখন জামায়াতের কথা আমার জানা ছিল না।আমি অলরেডি পাবলিকলি বলেছি যে, ভাই এটা তো আমার জানাই ছিল না। জামায়াতের ২৫ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আমি যখন সম্মতি দিয়েছি তখন এটা আমাকে জনানো হয়নি। অন্তত আমার মতে সেটা (জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনে যাওয়া) একটা ভুল।

এর আগে লিখিত বক্তব্যে মন্টু বলেন, ‘তাড়াতাড়ি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল-ক্রটি হয়েছে তা সংশোধন করে ভবিষ্যতের জন্য সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হবে। অনিচ্ছাকৃত ভুলত্রুটি বলতে কী বোঝানো হয়েছে এবং সেটা দ্বারা জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যকেও বুঝানো হচ্ছে কি না জানতে চাইলে কামাল বলেন, ‘একটা ভালো উদাহরণ আপনি দিয়েছেন। এটাকেও আমি মনে করবো, ইয়েস। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই জামায়াত নিয়ে বক্তব্য ঘুরিয়ে মন্টু বলেন, বিএনপির সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের মনোমালিন্য বা দূরত্ব নেই।

এই বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে কারও উপস্থিত না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্ট নেতা বলেন, বিএনপির মহাসচিব অসুস্থ, এ কারণে তিনি আজকের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেন নাই। মঈন খান এবং গয়েশ্বর চন্দ্র ওনাদের আরেকটা মিটিং ছিল, সে কারণে তাদের আসতে দেরি হয়েছে। আশা করছি পরবর্তী মিটিং আমরা এক সাথে বসে করব। ঐক্যফ্রন্ট প্রথমে যে জায়গায় শুরু করেছিলাম, এখনও ওই একই জায়গায় আছি। আমাদের মধ্যে কোন দ্বিমত নাই।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page