বিষয় :

প্রশ্নফাঁস: এসএসসির কোনো পরীক্ষা বাতিল না করার সিদ্ধান্ত


৩ মে, ২০১৮ ৫:২৯ : অপরাহ্ণ

সকালেরসময় নিউজ ডেস্ক::  এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে রচনামূলক অংশের প্রশ্নপত্র ফাঁস না হওয়ায় কোনো বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল করা হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

তিনি বলেছেন, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের সুবিধাভোগীর সংখ্যা শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থীরে কারণে ২০ লাখের বেশি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল না করার পক্ষে মত দিয়েছে কমিটি। তাই এসএসসির কোনো বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ মে) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশের ভিত্তিতে শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশের কারণে বাকি ৯৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ পরীক্ষার্থীর ফলাফলে প্রশ্ন ফাঁসের প্রভাব পড়বে না।

পুনরায় পরীক্ষা নিয়ে বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীকে ভোগান্তিতে ফেলা সমীচীন হবে না-বিবেচনায় নিয়ে কোনো পরীক্ষা বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড প্রশ্নফাঁসের কোনো তথ্য বা অভিযোগ না থাকায় সে পরীক্ষা বাতিলেরও কোনো প্রশ্ন আসে না। প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসএসসির ১৭টি বিষয়ের মধ্যে ১২টি বিষয়ের শুধু ৩০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) অংশের চারটি সেটের মধ্যে ‘খ’ সেটের ।

তবে কোনো বিষয়ের রচনামূলক (সৃজনশীল) অংশের ৭০ নম্বরের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু ক্লোজ গ্রুপে প্রশ্ন শেয়ারের ঘটনা ঘটেছে। যদিও হাতে গোনা কয়েকটি গ্রুপের ফাঁস ও হওয়ার প্রশ্ন মূল প্রশ্নের সঙ্গে মিলেছে, তবে বেশিরভাগ গ্রুপের প্রশ্ন সঠিক ছিল না। এ ধরনের ক্লোজ গ্রুপের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০টি। আর সদস্য হবে সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১০০ জন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নফাঁসকারী বেশিরভাগ চক্র ফেসবুকে আগেই ছবি পোস্ট করে অনলি মি (শুধু নিজে দেখতে পারবে) করে রাখতো। পরীক্ষা শেষে প্রশ্ন সংগ্রহ করে সেটি আপলোড করে পোস্টটি পাবলিক (সবাই দেখতো পারবে) করে দিতো। এতে আগের সময় দেখাতো। আর এসব তথ্য নিয়ে মিডিয়া প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলে প্রচার করেছে।

কমিটির প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, জালিয়াত চক্র মূলত আয়ের একটা কৌশল হিসেবে এসব করেছে। এরকম কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ সাজেশন আকারে প্রশ্ন সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছে সেখানে থেকে কিছু প্রশ্ন স্বাভাবিক কমন পড়েছে। ক্লোজ গ্রুপের মাধ্যমে প্রশ্ন সুবিধাভোগীরা পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশের আগে সবোর্চ্চ ১০-২০ মিনিট সময় পেতো।

ফলে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে হলে প্রবেশ বাধ্যতামূলক হওয়ায় ১০-২০ মিনিটে ৩০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন উত্তর খুঁজে বের করা সহজ নয়। ফলে তাদের সামগ্রিক ফলাফলে এটা খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। প্রতিবেদনের সুপারিশের কথা উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ পরবর্তীতে তদন্তে প্রমাণ মিললে প্রশ্নফাঁসের ফলে সুবিধাভোগী পরীক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তাদের ফলাফল বাতিলসহ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি মোবাইলে লেনদেনকারীদের পেশা যাচাই করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের পর গত ৬ ফেব্রুয়ারি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, শিক্ষা বোর্ডসমূহের তিনজন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, বিটিআরসি, পুলিশ হেড কোয়ার্টাস ও ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রতিনিধিরা এই কমিটির সদস্য করা হয়।

এ বছরের ১১ মার্চ প্রতিবেদন জমা দিলেও তা প্রকাশ করা হয় গত ১২ এপ্রিল। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, শিক্ষা বিভাগের সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page