৬ দিন পর আবার ১০১ জনের মৃত্যু, সনাক্ত ছাড়ালো ৭ লাখ


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২৫ এপ্রিল, ২০২১ ৫:৫৬ : অপরাহ্ণ

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত একদিনে বাংলাদেশে আরো ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত সপ্তাহে টানা চারদিন মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিক থাকলেও গত পাঁচদিন তা একশোর নিচে নেমে আসে। তবে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় মৃত্যুর এই গ্রাফ ফের একশো ছাড়াল।

গত এক বছরেরও বেশি সময়জুড়ে প্রাণঘাতি এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১০ হাজারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। এ পর্যন্ত দেশে ১১ হাজার ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিডজনিত কারণে।

মারাত্মক সংক্রামক এই ভাইরাসটি গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে দেশের আরও ২ হাজার ৯২২ জনের দেহে। মহামারি শুরুর পর থেকে সব মিলিয়ে এই শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ এ। সংক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভে গত কয়েক দিন ধরেই ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়ে আসছিল। তবে লকডাউনের কারণে পরীক্ষা কমে যাওয়ার সঙ্গে কমেছে শনাক্তের সংখ্যাও।

রোববার (২৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪ হাজার ৩০১ জন কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫২ জন সেরে উঠলেন প্রাণঘাতি এই ভাইরাস থেকে।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ২১ হাজার ৪৪৮টি, আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২১ হাজার ৯২২টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫০১টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫৪টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ১৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪৭টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৪৮ শতাংশ।

দেশে বর্তমানে মোট ৩৫০টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১২২টি পরীক্ষাগারে, জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৩৪টি পরীক্ষাগারে এবং র‌্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১৯৪টি পরীক্ষাগারে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে পুরুষ ৫২ জন নারী ৪৯ জন। অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা নারীদের প্রায় তিনগুণ বেশি।

গত বছরের মার্চে দেশে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল।

পরে সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়। তবে প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের সংক্রমণের তীব্রতা খুব বেশি। বর্তমান পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ১৯ দিন পর মৃত্যুর খবর জানায় সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে বাংলাদেশ ৩৩তম এবং মৃতের সংখ্যায় ৩৭তম অবস্থানে রয়েছে।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ