চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে তিন দিন ধরে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গত ৪৮ ঘণ্টায় ১২৪ রোগী ভর্তি হয়েছে। অনেকেই আবার সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত ৪১ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে এই হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ১৫ থেকে ২০ রোগী ভর্তি হতো।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কয়েকটি এলাকায় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেওয়ার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) পরিচালক বরাবর চিঠিও দিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিআইটিআইডিটিতে ভর্তি রোগীদের বেশির ভাগই ফ্রি-পোর্ট, ইপিজেড, পতেঙ্গা, হালিশহর ও উত্তর আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকাগুলো প্রায়ই বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জীবাণু পরীক্ষার জন্য আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদল চট্টগ্রামে আসার কথা রয়েছে।’
বিআইটিআইডি ট্রফিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ গত রাত পৌনে ৮টার দিকে জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে সাতজনের কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে। তিন দিন ধরে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে গেছে। এর মধ্যে গত ১৫ আগস্ট ভর্তি হওয়া ৬৯ জন ডায়রিয়া রোগীর মধ্য থেকে ২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
আগে দৈনিক গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হতো উল্লেখ করে তিনি জানান, গতকালও নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছেন তাঁরা। এসব রিপোর্ট আজ বৃহস্পতিবার পাওয়া যেতে পারে।
বিআইটিআইডিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ১৬ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৬৯ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। ১৬ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৫৫ জন। এরপর গতকাল সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা সোয়া ৮টা পর্যন্ত ২৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। এই সময়ে ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৫৯ জন। এ হিসাবে গত ১৫ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৫৯ ঘণ্টায় ১৫১ জন রোগী ভর্তি হয়।
ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের অনেকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড), ব্যারিস্টার সুলতান আহমদ কলেজ এলাকা, মাইলের মাথা, ধুপপুল, পতেঙ্গা, কাঠগড়, হালিশহর, ডবলমুরিং ও আগ্রাবাদের কয়েকটি এলাকার। এর মধ্যে সব বয়সের রোগীই আছে। তবে আক্রান্তদের মধ্যে মাঝবয়সী ও পুরুষের সংখ্যা বেশি। একই পরিবারের একাধিক সদস্যও আছে।
এসএস