স্বয়ংক্রীয় হালকা বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে সফল,চট্টগ্রামের আনোয়ার হোসেন


২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১২:৫৫ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় ডেস্ক::  আবিষ্কারের নেশা ছিল তার ছোট বেলা থেকেই। তিনি কোন না কোন কিছু আবিষ্কার করতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন এবং অর্থনৈতিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তবুও আবিষ্কারের নেশায় পাগলপ্রায় আনোয়ার হোসেন হাল ছেড়ে দেননি। অবিরাম গবেষণা চালিয়ে আবিষ্কারের পিছনে সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে চলেছেন। চট্টগ্রামের হালদা নদীর পাড়ের মোহরা এলাকার আনোয়ার হোসেন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেও মেধা ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কোন না কোন কিছু আবিষ্কার করেই ছাড়বেন এই শপথে তার বেড়ে উঠা। জীবনের পঞ্চাশ বছর বয়স অতিক্রম করার পরও আবিষ্কারের নেশায় তাকে অনেক সময় না খেয়ে দিন-রাতযাপন করতে হয়েছে। পাড়া প্রতিবেশীরা তাকে অনেক সময় পাগল উপধিতেও ভূষিত করেন। কিন্তু শত অপবাদ সহ্য করতে রাজি

আবিষ্কারের নেশা ছাড়তে রাজি না আনোয়ার হোসেন। এরি মধ্যেই তিনি আবিষ্কার করে ফেললেন স্বয়ংক্রিয় হালকা বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প। তার উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ইলেক্টিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ফ্যামিলি অটো পাওয়ার প্রজেক্ট। এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায় ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ফ্যামিলির অটো পাওয়ার প্রজেক্ট তৈরি করতে দুইটি ডায়ানমার সাথে ১২ ভোল্টের একটি ব্যাটারি সংযুক্ত করে ব্যাটারির তারের সাথে একটি অফ অন সুইচ থাকবে। আর ঐ সুইচ অন করার সাথে সাথে ডায়নামা থেকে বিদুৎ উৎপাদন হবে এবং ডায়নামা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যাটারি চার্জ করবে। ব্যাটারির সাথে একটি এসি পাওয়ার রিচার্জ, সিপিএস এবং সিপিএস এর সাথে একটি ভোল্ট স্টেপআপ ট্রান্সফরমার থাকবে এর সাথে

আইটেপটার যুক্ত হবে। এর পর আইটেপটার থেকে বিভিন্ন ভোল্টের বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তিনি আরো বলেন, প্রজেক্টটি সম্পূর্ণরূপে তৈরি করতে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। এবং এই প্রজেক্ট থেকে এক হাজার ওয়াট এর বেশি পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। আনোয়ার হোসেন আরো বলেন এ বিদ্যুৎ দিয়ে গাড়ী চালানোও যাবে, ঘরে এবং বাইরে আলোক সজ্জার কাজও করা যাবে। তিনি ২০০৩ সালে ভাসমান জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নামে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তিও আবিস্কার করেন। সরকার বা বৃহৎ কোন প্রাইভেট সেক্টর থেকে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ভবিষ্যতে তিনি কৃত্রিমভাবে জ্বালানি গ্যাস উৎপাদনের প্রযুক্তিও আবিস্কার করবে বলে জানান। অত্যন্ত মেধাবী ও নিরব স্বভাবের লোক আনোয়ার হোসেনের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তেমন কোন বড় মাপের মানুষের সাথে তার সম্পর্কও নেই। প্রযুক্তি আবিষ্কার করতে করতে তার পুরো জীবনটাই ব্যর্থ বলে সাধারণ মানুষ মনে করেন। কিন্তু এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন লোকের কথাই কি আসে যায়, আমার মনে যাহা চায়।

তার আবিষ্কারকে সরকার ও দেশবাসী একদিন মূল্যায়িত করবে বলে আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে এখনও সেই উদ্ভাবিত প্রযুক্তির পেছনে সময় দিয়ে যাচ্ছেন। ধৈর্য্য, শ্রম, সাধনা ও অর্থ অপচয়ের মাধ্যমে আবিষ্কারের সাধক উদ্ভাবক আনোয়ার হোসেনের এই বিদ্যুৎ প্রকল্প দেশব্যাপি কাজে লাগানোর জন্য ইতিমধ্যে সরকারি ও প্রাইভেট সেক্টরের দৃষ্টি করছেন আনোয়ার হোসেন। উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অনুমোদনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুৎ গ্রাহকগণ শতভাগ উপকৃত হবে বলে তার এবং সর্বস্থরের মানুষের দৃঢ় বিশ্বাস।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ