সারাদেশ ডেস্ক : নিজের মাথায় নিজেই পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেছে চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর ব্যবসায়ী মো. আবু মহসিন খান (৫০)।
বুধবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডি ৭ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে। গুলি করার আগে লাইভে মহসিন কালিমা পড়তে শোনা গেছে।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুক লাইভে এসে বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা নিয়ে কথা বলেন মহসিন। সাম্প্রতিককালে নিকট আত্মীয়দের মৃত্যুর ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি ক্যান্সার আক্রান্ত।
আমার ব্যবসা এখন বন্ধ। আমি বাসায় একাই থাকি। আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। আমার ভয় করে যে আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পঁচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না।
ফেসবুক লাইভে মহসিন আরও বলেন, পিতামাতা যা উপার্জন করে তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করে। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামেলিকে দেয়ার চেষ্টা করে।
কিন্তু ফ্যামেলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না। যারা দেখছেন, তাদের সাথে এটাই শেষ দেখা। সবাই ভালো থাকবেন।
এরপর কালেমা পড়তে পড়তে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন তিনি। তার আগে পিস্তলের লাইসেন্স দেখান। বলেন, আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি সেটি ইলিগ্যাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে।
আমি চলে যাবো। আত্মীয় স্বজন যারা আছো, যেহেতু বাবাও আমাকে জায়গাটা দেয়নি, আমি যে কবরস্থানটা করেছি সেখানে আমাকে দাফন করো না।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে একটি কবরস্থান হয়েছে, সেখানে তোমরা আমাকে দাফন করে দিও। প্রত্যেকটা লোক আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমার বাবা, মা, ভাইরা, প্রত্যেকটা লোক, এভরিওয়ান।
মহসিন চেয়ারে বসে ফেসবুক লাইভে কথা বলেন। তার সামনে টেবিল ছিল। ওই টেবিলে কাফনের কাপড় ছিল। এর ওপর একটি চিরকুট ছিল; তাতে লেখা আছে, এখানে কাফনের কাপড় রাখা আছে। যা আমি ওমরা হজে ব্যবহার করেছিলাম।
মহসিন বলেন, আমি যদি বাসায় মরেও পড়ে থাকি- এক সপ্তাহ পরও কেউ জানবে বলে মনে হয় না। এক বন্ধুসহ বিভিন্ন মানুষের কাছে তিনি ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পান বলে জানান।
ধানমণ্ডি থানার ওসি একরাম আলী মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আবু মহসিন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, তিনি নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
লাইভের এক পর্যায়ে এসে তিনি ছেলে-মেয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তারপর লাইভের ১৬ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের মাথায় তিনি আত্মহত্যা করেন। তার আত্মহত্যা করার পরও লাইভ চলছিল। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এই লাইভ চলমান থাকে।
এস এস/