পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে অপহৃত ৫ কৃষকের চারজন উদ্ধার


নিউজ ডেস্ক  ২৪ মার্চ, ২০২৪ ৩:০৭ : অপরাহ্ণ

পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের কারণে টেকনাফের পাহাড় থেকে অপহৃত পাঁচ কৃষকের মধ্যে চারজনকে ছেড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বাকী জিম্মি একজনের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি। শনিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প-সংলগ্ন পশ্চিমের গহিন পাহাড়ে এ অভিযান চালানো হয়।

উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী এলাকার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে মো. জিহান (১৩), একই এলাকার ফকির আহম্মদের ছেলে মো. রফিক (২২) ও মো. ছৈয়দুল্লাহর ছেলে মো. শাওন (১৫) ও নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহমান (১৫)। জিম্মি থাকা মোহাম্মদ নুর (১৮) একই এলাকার বাসিন্দা।

এর আগে বুধবার (২০ মার্চ) রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী পাহাড়ি এলাকায় খেতে পাহারার দায়িত্বে ছিলেন অপহৃত ওই পাঁচজন কৃষক। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভোরে একদল দুর্বৃত্ত তাঁদের তুলে নিয়ে যায়।

অপহৃতদের স্বজনেরা জানিয়েছিলেন, অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি তাঁদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এর মধ্যে মোহাম্মদ নুরের স্বজনের কাছে ১৫ লাখ টাকা এবং অন্যদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

টেকনাফ থানার ওসি ওসমান গনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অপহৃত পাঁচ কৃষককে উদ্ধারে পুলিশ ও র‍্যাব যৌথ অভিযান চালায়। পরে রাতে টেকনাফের শালবন ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পশ্চিমে গহিন পাহাড়ে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে কোণঠাসা হলে দুর্বৃত্তরা চারজনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

এ সময় উদ্ধার হওয়াদের চোখ-মুখ ও হাত-পা বাঁধা ছিল না। তাঁরা জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তরা ছেড়ে দেওয়ার আগেই তাঁদের চোখের বাঁধন খুলে দেয়। জিম্মি হওয়ার পর থেকেই তাঁদের চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকলেও হাত-পা খোলা ছিল।

ওসি জানান, অপহৃতদের মধ্যে একজন এখনো জিম্মি রয়েছেন। তাকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উদ্ধার ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। তবে অপহৃত একজনের পরিবার জানিয়েছে, চারজনকে মুক্তি দেওয়ার আগে অপহরণকারীরা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছে।

উল্লেখ্য, ১০ মার্চ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প-সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় সাতজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণকারীরা। এক দিন পরে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাঁরা ফিরে আসেন।

এর এক দিন আগে গত ৯ মার্চ হ্নীলার পূর্ব পানখালী এলাকা থেকে মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র ছোয়াদ বিন আব্দুল্লাহকে (৬) অপহরণ করা হয়। তাকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি। গত এক বছরে টেকনাফের পাহাড়ে ১০৩ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫২ জন স্থানীয় এবং ৫১ জন রোহিঙ্গা। বেশির ভাগই মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত এসেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।

এসএস/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ