টেকনাফ সীমান্তজুড়ে গোলাগুলির শব্দ–সতর্ক বিজিবি


নিউজ ডেস্ক  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৪:৫৫ : অপরাহ্ণ

কক্সবাজারে টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের ওপার থেকে আজও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। নাফ নদীতে স্থানীয়দের বহনকারী নৌযান চলাচল সীমিত রয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, বিস্ফোরণের শব্দ তাদের কাছে ভূমিকম্পের মতো মনে হয়েছে। তারা বলছেন, মিয়ানমারের এপারে বাংলাদেশের কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ ও এর আশেপাশের এলাকায় এই আওয়াজ শোনা গেছে।

এক ইউপি সদস্য আব্দুস ছালাম জানান, রোববার রাতে পরিস্থিতি শান্ত ছিল। কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। তবে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে থেমে থেমে আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাপাড়া, মাঙ্গালা, নলবন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকায় দেশটির সরকারি বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে তীব্র লড়াই চলেছে। ওই এলাকাগুলো রোহিঙ্গা অধ্যুষিত। সেখানকার বাসিন্দারা প্রাণ বাঁচতে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ছুটছেন। অনেকে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া নদী ও খালে অবস্থান নিয়েছেন।

এ নিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের নাফ নদী দিয়ে আবারও রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলেও তা সংখ্যায় আগের মত ব্যাপক নয়।

টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী জানান, সংঘাতের বিষয়টি মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে এখানে (বাংলাদেশে) যাতে কোনো সমস্যা না হয়, এ জন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড টহল বাড়িয়েছে। এ নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান জানান, সম্প্রতি রোহিঙ্গাবিষয়ক টাস্কফোর্সের সভায় নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় জাতিসংঘের একটি সংস্থার পক্ষ থেকে সীমান্তের ১৯টি পয়েন্টে অবস্থানরত প্রায় ৯০০ রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেওয়ার একটি প্রস্তাবও আসলে তা নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা বইতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। এছাড়াও এসব রোহিঙ্গাদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলাসহ দিন দিন নানা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, কোনো পরিস্থিতিতে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢুকতে দেয়া হবে না।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা এবং বর্তমানে নতুন পুরনো মিলে বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার সাড়ে ছয় বছর পার হলেও মিয়ানমারের নানা ছলচাতুরির কারণে একজন রোহিঙ্গাকে সেদেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

এসএস/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ