সকালেরসময় ডেস্ক:: হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের দক্ষ ও তরুন কর্মকর্তা রুহুল আমিন। তিনি ৩০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারের চৌকস কর্মকর্তা রুহুল আমিন ২০১২ সালের ৩ জুন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগদান করেন। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে সীতাকুণ্ডে দায়িত্ব পালন করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ব্যাপক সুনাম ও সুখ্যাতি অর্জন করেন। এরপর তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের রাজস্ব বিভাগে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ছিলেন।
৬ মে কাপ্তাইয়ে ইউএনও হিসেবে যোগদানের চার মাসের মাথায় তাকে বদলি করা হল হাটহাজারীতে। আলোচিত এ সরকারি কর্মকর্তা একই সাথে দায়িত্ব পালন করছেন জেলা প্রশাসন পরিচালিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে। হাটহাজারী নির্বাহী অফিসার হিসেবে কর্মরত (ইউএনও) আক্তার উন্নেছা শিউলী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসাবে পদোন্নতি পাওয়ায় এ পদে রুহুল আমিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ উপলক্ষে রোববার হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এক বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া আক্তার উন্নেছা শিউলী নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ,উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ,সদ্য যোগদানকারি নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিনের স্ত্রী ফারজানা শারমিন মৌসুমী, রুহুল আমিনের একমাত্র মেয়ে আরিশা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দও হাটহাজারী প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নাম থেকেই বোঝা যায় এর কাজ। ক্যাডার সার্ভিস শুরুই হয়েছে বলতে গেলে এই ক্যাডার দিয়ে। তাদের মূলত দেশ চালনার মূল হাতিয়ার বলে থাকেন কেউ কেউ । একটা সময় প্রায় ৯০ ভাগ প্রার্থীই নাকি এই ক্যাডার প্রথম পছন্দে দিত (সূত্রঃ একজন অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব), এমনকি এখনো প্রায় ৫০-৬০ ভাগ লোক তাই দেয়।
এক নজরে নির্বাহী কর্মকর্তাদের সুবিধা-আসুবিধা সমূহ
১>> মফস্বলে পোস্টিং এর সম্ভাবনা সচেয়ে বেশি তাই জনগনের সাথে কাজ করার সুযোগও বেশি।
২>> চাকরিতে ঢুকে ডিসি অফিসে কাজ করা লাগে ,স্বল্প সংখ্যক অ্যাডমিন ক্যাডার অবশ্য মন্ত্রনালয়ে সহকারি সচিব হিসেবেও কাজ করে থাকেন।
৩>> মোটামুটি ৫-৬ বছর পর UNO হওয়া যায়, আর একজন UNO কে উপজেলা পর্যায়ের সরকার নিয়োজিত ‘রাজা’ বললে মনে হয় কেউ কস্ট পাবে না , কারণ UNO হলে বাংলো ও গাড়ি সুবিধা পাওয়া যায়, উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান/সেমিনার/কর্মশালা ইত্যাদিতে গেস্ট/চীফ গেস্ট হিসেবে যাওয়া লাগে, উপজেলা পর্যায়ে ক্ষমতার ব্যবহার ব্যাপক; ডিসি’রা জেলা লেভেলের প্রশাসক, ডিসি’র কাজ ও সুবিধা সমূহ আশা করি সবাই জানেন।
৪>> অ্যাডমিন ক্যাডারের সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে ভ্যারিয়েশন, এই ক্যাডারের লোকজন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার সুযোগ পান, এমনকি চাকরি শেষ হলে যোগ্যতা ও দক্ষতার ও রাজনৈতিক ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও এরা এগিয়ে যেমন পিএসসি’র মেম্বার/চেয়ারম্যান।
৫>> প্রচুর স্কলারশিপ থাকায় বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ অনেক বেশি, উচ্চ শিক্ষা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সংস্থাতে প্রেষণে,ডেপুটেশনে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, জাতিসঙ্ঘ, ইউনেস্কো,এডিবি ইত্যাদিতে। যাওয়ার সুযোগ অন্য সব ক্যাডারের চাইতে অনেক অনেক বেশি, উল্লেখ্য ডেপুটেশনে অনেক উচ্চ বেতন দেয়া হয় (যেমন জাতিসংঘে প্রারম্ভিক P-5 গ্রেড ইকুইভ্যালেন্ট প্রায় ১ লাখ ডলার)। ৬>>পররাস্ট্র ক্যাডার না হয়েও অনেকে বিদেশে কূটনৈতিক মিশনে কাজ করার সুযোগ পান, এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেস্টা হওয়ার রেকর্ড ও এই ক্যাডারের লোকের আছে।
৭>>এই ক্যাডারে প্রমোশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা,উচ্চ শিক্ষা , বৈচিত্র্যময় কাজের অভিজ্ঞতা, সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হিসেবে দেখা হয়, আর এই যোগ্যতা না থাকলে রাজনৈতিক প্রভাবে প্রমোশন হয় ,রাজনৈতিক প্রভাব অনেক বেশি ঠিক আছে কিন্তু দক্ষ লোককে প্রায়রিটি দেয়ার উদাহরন ও অনেক আছে (উদাহরনঃ আকবর আলি খান, সাদাত হুসেন ইত্যাদি আরও অনেক। ৮>> এই ক্যাডারে একি ব্যাচের লোকের যেমন উপসচিব হয়ে অবসরে যাওয়ার রেকর্ড আছে তেমনি ঐ ব্যাচেরই একজনের কেবিনেট সচিব হওয়ারও রেকর্ড আছে ,সরকারের সচিব বা সচিব পদমর্যাদার পোস্ট গুলোতে অ্যাডমিন ক্যাডাররাই অধিস্টিত হন,কিছু সেক্টর বাদে।
৯>> এই ক্যাডারে কাজের চাপ ভালই তবে দায়িত্ব অনুসারে কাজের চাপ নির্ভর করে। রাজনৈতিক চাপ অনেক বেশি, তাই ইচ্ছার বিরুদ্ধেও অনেক সময় অনেক কাজ করতে হতে পারে(যেমন হরতালে মোবাইল কোর্ট)। আবার রাজনৈতিকভাবে মোহরকৃত (সীল মারা) ব্যাক্তিগণের বিরোধী দল ক্ষমতায় এলে OSD হওয়ার রেকর্ড ও প্রচুর । এই ক্যাডারে যারা সাধারণত বেশি দিন চাকরি করতে পারেন (যেমন প্রথম দিকে যারা বিসিএস দিচ্ছেন) তারাই বেশি লাভবান হয় কারণ তাদের উচ্চ পদে (সচিব বা তদূর্ধ্ব ) যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, যদিও প্রমোশন আরও অনেকগুলো প্যারামিটারের উপর নির্ভর করে।
সূত্র: মোঃ আশিকুর রহমান চৌধুরী ৩৪ তম বিসিএস (প্রশাসন)