বিষয় :

স্ত্রীর মর্যাদা চাওয়ায় ছাত্রলীগ নেত্রীকে চেয়ারম্যানের নির্যাতন।


১৩ জুলাই, ২০১৮ ২:০৮ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় ঝালকাঠি প্রতিনিধি:: স্ত্রীর মর্যাদা চাওয়ায় ঝালকাঠি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম ও তার স্ত্রীর ‘নির্যাতনে’ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারজানা ববি নাদিরা। ১১ জুলাই, বুধবার ঝালকাঠি জেলা পরিষদ অফিসে এ ঘটনা ঘটে। নাদিরাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জেলা পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করি আমি। চেয়ারম্যান শাহ আলমের (৭২) সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছরের সম্পর্ক ছিল। প্রথমে প্রেম, তারপর সেই প্রেম শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। শাহ আলম আমাকে ভালোবাসেন। তিনি বলেছেন, যতদিন বেঁচে থাকবা, ততদিন আমার হয়েই থাকবা। দীর্ঘদিন ধরে তাকে বিয়ের কথা বলে আসছি। কিন্তু বিয়ের বিষয়টি বরাবরই এড়িয়ে যান শাহ আলম।

বুধবার সকালে আমি জেলা পরিষদে যাই। উনাকে বলি, দেখেন পরিস্থিতি তো খুব খারাপ। আপনার তো সবই আছে। কিন্তু আমার কী হবে, আমার তো কিছুই থাকবে না। এ অবস্থায় আপনি আমার জন্য কী করবেন? তখন শাহ আলম বলেন, তুমিই বলো তোমার জন্য আমি কী করতে পারি। তখন আমি বিয়ের কথা বলি।

শাহ আলমের বক্তব্য উদ্ধৃত করে নাদিরা বলেন, আমার পক্ষে তো আর তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব না। আমি কতদিন আর বাঁচব? আমি তোমাকে বিয়ে করে তোমার ফিউচার (ভবিষ্যৎ) নষ্ট করতে চাই না। আমি (নাদিরা) বলেছি, ফিউচার লাগবে না; এখন যে অবস্থা আপনি আমাকে বিয়ে করতে পারেন। আমার ফিউচার লাগবে না। আপনি আমাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেন। আমি মানসম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই। আমার পরিবার আছে, সেখানে স্থান পাচ্ছি না। এসব জানলে আমাকে বাসা থেকে বের করে দেবে।

এসব কথা বলার পর চেয়ারম্যান আমাকে বলেন, এসব বাদ দিয়ে তোমার কী লাগবে বলো? আমি বলছি, আমার কিছুই লাগবে না। আমি শুধু আপনার কাছে স্ত্রীর মর্যাদা চাই। এর মধ্যে বিকেলে চেয়ারম্যানের স্ত্রী শাহানা আলম এসে অফিসে ঢুকে আমাকে ‘‘বাজারের মেয়ে’’ বলে মারধর করেন। সেই সঙ্গে চেয়ারম্যানকে উনি বলেন, চল চল, বাসায় যাই। ওই সময় আমি বলি, আপনারা যে যাচ্ছেন, আমাকে কী বলে যাচ্ছেন? আমি তাদের আটকানোর চেষ্টা করলে তারা আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে জেলা পরিষদের গাড়ি নিয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ আলম সকালেরসময়কে জানান, তার বিরুদ্ধে উদ্যেশ্যমূলকভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমের কক্ষে অবস্থান নিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দেন নাদিরা। বিকেল ৩টার দিকে জেলা পরিষদে হাজির হন শাহ আলমের স্ত্রী ও জেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী শাহানা আলম। তিনি সরদার শাহ আলমের কক্ষে ঢুকে নাদিরার ওপর চড়াও হন। সেই সঙ্গে তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে থাপ্পড় মারতে মারতে তাকে রুম থেকে বের করে দেন শাহানা আলম।

ওই সময় অনেক লোক জড়ো হন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান শাহ আলম ও স্ত্রী শাহানা আলম গাড়িতে ওঠে জেলা পরিষদ ত্যাগ করতে চাইলে নাদিরাও তাদের গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় নাদিরাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেন চেয়ারম্যানের স্ত্রী। পরে রাগে-ক্ষোভে জেলা পরিষদের দোতলার ছাদে উঠে সেখান থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নাদিরা। এ সময় কয়েকজন যুবক ও স্থানীয় যুবলীগ নেতারা তাকে ধরে ফেলেন। পরে আহত নাদিরাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page