চট্টগ্রামে নিজ বাসায় ইলহাম নামে এক কিশোরীকে গলাকেটে হত্যা


২৭ জুন, ২০১৮ ৭:১৪ : অপরাহ্ণ

মোহাম্মদ ফোরকান চট্টগ্রাম::  চট্টগ্রামে নিজ বাসায় ইলহাম (১২) নামে এক কিশোরীকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (২৭ জুন) সকাল পৌনে ১০টার দিকে নগরীর বাকলিয়া থানার লায়লা ভবনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। ইলহাম একই এলাকার সৌদি প্রবাসী মো. নাছিরের মেয়ে। সে নগরীর মেরন সান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) শীলব্রত বড়ুয়া বলেন, গলা কাটা অবস্থায় ইলহাম নামে এক মেয়েকে স্থানিয় লোকজন মেডিকেলে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, ইলহামকে বাসায় রেখে আরেক ছোট মেয়ে জারিন তাজলিমকে স্কুলে দিতে যান মা। পরে মা বাসায় ফিরে দেখেন ইলহাম রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছে। তাৎক্ষণিক তার শোরচিৎকারে  আসে পাশের লোকজন এসে মেয়েকে উদ্ধার করে (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জানান এলাকাবাসী।

এই বিষয়ে ইলহামের মামা আনোয়ার হোসেন বলেন: আমি খবর পেয়ে বাসায় এসে দেখি আমার ভাগিনির গলাকাটা লাশ সাথে সাথে আমি ও হতবঙ্গ হয়ে পড়ি। কিন্তু ঘটনার মোটিব বলে ভিন্ন কথা: সরাসরি মেরনসান স্কুল এন্ড কলেজে গিয়ে স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল রাজেশ কান্তি পালের সাথে কথা বললে তিনি বলেন: ইলহামের মা তার ছোট মেয়ে জারিন তাসলিমকে স্কুলে নিয়ে আসছে কিনা আমি দেখি নাই। আমি অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে উপরে ক্লাস রুমে ছিলাম। এর পর জারিন তাসলিম একা একা উপরে উঠতে দেখি। তাকে কে স্কুলে নিয়ে আসছে সিকিউরিটি বলতে পারবে।

এর পর সিকিউরিটি মোকসুদুল আলম বলেন জারিন তাসলিমকে আজকে কে স্কুলে নিয়ে আসছে আমি ও দেখিনি। কিন্তু মেয়ের মামা আনোয়ার হোসেন তাকে স্কুল থেকে নিয়ে যেতে দেখেছি। কিন্তু সবার মনে প্রশ্ন তখন ইলহামের মা কোথাই ছিল? আবার তারও হাত কাটা। রক্তাক্ত অবস্থায় কান্নাকাটি ও করছেন নাসরিন আকতার খুশবো এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে সে ও কোনো সৎউত্তর দিতে পারেনি।

এ বিষয়ে উপ পুলিশ কমিশনার জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন: আমরা শুনেছি সকালে ইলহামের মা তাদের অন্য মেয়েকে নিয়ে মেরনসান স্কুলে গিয়েছিল। স্কুল থেকে ফিরে দেখে তার মেয়ে গলাকাটা অবস্থায় চটফট চটফট করছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখি ইলহাম নামে এই বাচ্চা মেয়েটির লাশ পড়ে আছে তাৎক্ষনিক চট্টগ্রাম মেডিকেলে হস্তান্তর করি। কিন্তু এই ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তাদের গ্রেফতার করতে। পরে ময়না তদন্তে শেষে মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসলে মেয়ের মাকে আর খুজে পাওয়া যায়নি।

সাতকানিয়া ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা মো.নাচির উদ্দিনের মেয়ে নাছরিন আক্তার খুশবোর সাথে ১৯৯৬ সালে ডেমসা ইউনিয়নের ফাহিম মাস্টারের বাড়ীর বাসিন্দা মরহুম মোজাহের আহম্মেদের ছেলে সৌদিপ্রবাসী নাসিরের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার কিছুদিন পর নাসির স্বপরিবারে পাড়ি জমায় ১৭ নং ওয়াড পশ্চিম বাকলীয়া ল্যান্ডমার্ক আবাসিক এম.এস লায়লা ২৬৩৪/এ ভবন নামে নাচিরের নিজস্ব বিল্ডিংয়ে। মেয়ের চাচী জেবুনেচ্চা বলেন: মেঝ মেয়ে ও মেরন সান স্কুল এন্ড কলেজে প্রি নার্সারিতে পড়ে। আমাদের কোন শত্রুনেই কিন্তু কেবা কারা ইলহামকে হত্যা করেছে তাদের বিচার চায়।

ইলহামের গলাকাটা নিয়ে তার নানা নাচির উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন: আমার মেয়ে নাসরিন আক্তার খুশবো তখন কোথাই ছিল আমি জানি না। খবর পেয়ে দেখি আমার আদরের নাতনির গলা কাটা লাশ। কিন্তু কি ভাবে নাসরিন আক্তার খুশবোর হাত কাটাগেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার মেয়ে বাসায় ছিল সে জানে। ঘটনাস্থলে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা /পিবিএ / সিআইডির ও ডিবির তদন্ত টিম অপরাধী সনাক্তের কাজ করে যাচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page