শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকাদান সম্পন্ন হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল। সোমবার (১৭ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব একথা বলেন।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়া চলছে। তাই শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। সবারই একটা বক্তব্য আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংস্কারের কাজ করতে হবে। সরকার নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে, ইউনিভার্সিটি বা কলেজগুলোর যে হোস্টেলগুলো আছে সেগুলো অলরেডি ৪০টির মতো সংস্কার হয়ে গেছে।
যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ভ্যাকসিন আসছে। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের ভ্যাকসিনেটেড করে ফেলতে পারি তারপরে ইনশাল্লাহ তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজ খুলে দিতে পারবো ’ বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, শনিবার (১৫ মে) রাতে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে মহামারি করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হওয়ায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় এবং কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ছুটির সময় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এর পরে রোববার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো সকল সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের ছুটিও আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হল।
এ সময়ে নিজেদের এবং অন্যদের করোনার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করবে। এ সময়ে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ ও প্রাথমিক স্কুলের ছুটির কথা বলা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। এ ব্যাপারে আজ মন্ত্রিপরিষদ সচিবও কিছু জানাননি।
তবে চলতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ছুটি কতদিন বাড়বে এবং স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পুনঃনির্ধারিত হবে।
এর আগে করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ এবং ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার ঘোষণা দেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীর এমন ঘোষণার পরপরই বাড়তে থাকে সংক্রমণের হার। শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। পাল্টাতে থাকে পরিস্থিতি। বদলে যায় স্কুল-কলেজ খোলার তারিখ।
নতুন তারিখ দিয়ে বলা হয়, ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে খুলবে স্কুল-কলেজও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সেই তারিখ যখন দোরগোড়ায়, ঠিক সে সময় দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পরে রোগীর শরীরে। এতে ফের উদ্বেগ শুরু হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে।
এর মধ্যেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
এসএস
