বিষয় :

পুলিশ প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থেই সব শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে: রিজভী


২২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ৩:৫৬ : অপরাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট:: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেছেন, আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, ডিএমপি থানার ওসিরা সিল মারার জন্য প্রাপ্ত তালিকাভুক্ত আওয়ামী কর্মীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন। শনিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। রিজভী আহমেদ বলেন, ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে যাদের মনোনীত করা হবে তাদের নির্বাচনের দুই-একদিন আগেই গ্রেফতার করা শুরু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, খবর আছে ডিএমপির পক্ষ থেকে ভোট কারচুপি করা হবে। ৯টি পদ্ধতিতে ভোটের আগের রাতে সিল মারা হবে ব্যালটে। এই নয়টি পদ্ধতি হচ্ছে ১. অপেক্ষাকৃত যুবক বয়সের কর্মীরা সিল মারার দায়িত্বে থাকবেন। ২. পাঁচজন করে কেন্দ্রভিত্তিক সিল মারা গ্রুপ ঠিক করা হয়েছে। ৩. শুধুমাত্র দলনেতার কাছে মোবাইল থাকবে এবং ২৯ তারিখ রাতে নির্দিষ্ট নম্বর ছাড়া অন্য কোনও কল রিসিভ করবে না। ৪. থানা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই এর নেতৃত্বে থাকবে এবং রাতে ৩০ শতাংশ ভোট সিল মারা হলে তারা কেন্দ্র থেকে চলে যাবে। ৫. রাত ও দিনের বেলা কেন্দ্রের বাইরে পাহারা দেওয়ার জন্য কর্মীদের দ্বারা পৃথক টিম গঠন করে দিয়েছে পুলিশ। ৬. সিল মারার সময় বাইরে সর্তক অবস্থায় থাকবে বিভিন্ন বাহিনী।

৭. দিনের বেলায় আওয়ামী লীগের অন্য কর্মীরা লাইনে থাকবে, বারবার বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আবার ঠিক করা হবে এবং ভোট প্রদানের গতি অনেক মন্থর করা হবে। ৮. পুলিশের মোবাইল টিম কর্তৃক বিরোধী দলের সমর্থিত এলাকার লোকদের আসার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করবে। ৯. ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা অধীনস্থ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে বলেন, যারা সরকারকে বিজয়ী করতে চান, তারা হাত তুলুন- এভাবে প্রতিশ্রুতি আদায় করা হচ্ছে অধস্তন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, পুলিশ প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থেই নির্বাচন একতরফা করতে সব শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন মরণকামড় দিচ্ছে। ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের চালুনি দিয়ে ছেঁকে তুলছে।

সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে-বাড়িতে হানা দেওয়া হচ্ছে তাদের ধরার জন্য। নেতাকর্মীদের না পেয়ে মহিলা সদস্যসহ পরিবারের লোকজনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং কোথাও কোথাও বিএনপি নেতাকর্মীদের না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রুহুল কবির রিজভী আহমেদ দাবি করেন, আমরা জানতে পেরেছি, আজ থেকে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপারেশনের মাত্রা বাড়ানো হবে।

এক্ষেত্রে বিজিবি ও র‌্যাবকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা সরবরাহ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সারাদেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা স্থানীয় থানায় ইতোমধ্যে জমা দিয়েছে। সেই তালিকাগুলোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন বিজিবি ও র‌্যাবের কাছে সরবরাহ করছে। এ তালিকা ধরে ধরে আজ রাত থেকেই নাকি নেতাকর্মীদের আটক করা হবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয় যে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ২২০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করবে, সেটার বাস্তবায়নের জন্যই মাস্টারপ্ল্যান করে বিএনপির প্রার্থিতা বাতিল ও স্বয়ং এমপি প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং জামায়াতের নেতা বলে আরও ২২-২৩টি আসনে প্রার্থিতা বাতিল করার পরিকল্পনা চলছে।

ইসি কর্তৃক তালিকা চূড়ান্ত করার পর প্রার্থিতা বাতিল চরম প্রতারণামূলক। এর দায় ইসিকেই নিতে হবে। মোট কথা ২৭/২৮ তারিখের মধ্যে এ পদ্ধতিতে বেশ কিছু আসনের জয় তারা নিশ্চিত করতে চায়। অথচ নৌকা মার্কার প্রার্থী চিত্রনায়ক ফারুক ঋণখেলাপি হয়েও প্রার্থী হয়েছেন, নির্বাচন কমিশন ও আদালত এক্ষেত্রে নির্বিকার। নৌকা মার্কার আরেক প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফী সরকারি বেতনভুক্ত, অথচ তিনিও বৈধ প্রার্থী। অসংখ্য দণ্ডিত ও ঋণখেলাপিরা নৌকা মার্কার প্রার্থী। আসলে ক্ষমতা হাতে থাকলে পাহাড়েও নৌকা ভাসানো যায়।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ