ঐক্য ফ্রন্টের মধ্যে যেমন ঐক্য নাই, তেমনি বিশ দলীয় জোটের মধ্যেও ঐক্য নাই: ড.হাসান মাহমুদ


সকালের-সময় রিপোর্ট  ২৯ জুন, ২০১৯ ৬:০২ : পূর্বাহ্ণ

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিশ দলীয় জোটের মধ্যে অনৈক্য প্রকাশ করার জন্যে এলডিপির সভাপতি কর্নেল অলি আহমদকে অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এখন তিনি কোথায় আছেন তা প্রশ্ন থেকে যায়। তিনি কি নিজে ঘোষিত জোটের নেতা হিসেবে আছেন নাকি বিশ দলীয় জোটের নেতা হিসেবে আছেন নাকি ঐক্যফ্রন্টের নেতা হিসেবে আছেন।

এটা একটি বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে রাজনীতির মাঠে। ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি ঐক্য ফ্রন্টের মধ্যে যেমন ঐক্য নাই তেমনি বিশ দলীয় জোটের মধ্যেও ঐক্য নাই। তাদের মধ্যে যে ঐক্য নাই সেটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে কর্নেল অলি আহমদের আলাদা জোট গঠন করা। কর্ণেল অলিকে অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আশাকরি তিনি তার পরিচয় জনগণের সামনে তুলে ধরবেন। শুক্রবার আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান এম এ সালাম।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান রাজনীতিবিদদের কেনা বেচার হাট বসিয়ে বিএনপি গঠন করেছেন। সেই হাটে যারা বিক্রিত হয়েছিলেন তাদের মাঝে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছেন। সেই কারণে দেখতে পাচ্ছি বিএনপি অফিসে ১০ই জুন থেকে বিক্ষোভ চলছে।

১৮ দিনের বেশি সময় ধওে নিজেদেও অফিস যেখানে সাধারন কর্মীরা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তারা নাকি সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন করবেন। যারা নিজেদের কর্মীদের তুষ্ট করতে পারেননা, শৃঙ্খলার মধ্যে রাখতে পারেননা তারা দেশের মানুষকে কিভাবে খুশি রাখবেন এবং দেশ কিভাবে পরিচালনা করবেন।’

তিনি বলেন, যেখানে রাজনীতির জন্য আমাদের পূর্বসুরিরা জীবন দিয়েছেন সেখানে আজকে আমরা সামান্য স্বার্থ ত্যাগ করতে পারিনা। দলের মধ্যে লেখাপড়া ও আদর্শের চর্চা করার অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দলের ইতিহাস দেশের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। আমাদের সাথে বিএনপির পার্থক্য সেখানেই আমরা দলের সাধারন সমর্থক ও কর্মীরা মনে করি আমাদের প্রথম পরিচয় বাঙ্গালী তারপর দ্বিতীয় পরিচয় হচ্ছে কে মুসলমান, হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টান। আর যারা বিএনপি করেন তাদের প্রথম পরিচয় মুসলমান, হিন্দু, খ্রীষ্টান বৌদ্ধ। দ্বিতীয় পরিচয় হচ্ছে তারা বাংলাদেশি নাকি বাঙ্গালী তা নিয়ে দ্বিধা দ্বন্ধে থাকেন। এটাই হচ্ছে তাদের সাথে আমাদের মূল পার্থক্য।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু সংসার পেতেছিলেন কিন্তু সংসার কখনো করেন নাই। সংসার করতে নাপারার কারণ হলো তিনি সবসময় থাকতেন জেলে। একবার বঙ্গবন্ধুকে আদালতে হাজিরার জন্য আনা হলে ছোটভাই শেখ কামালকে নিয়ে দেখতে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তখন শেখ কামাল জানতেননা বঙ্গবন্ধু তার বাবা। শেখ হাসিনা তাকে বাবা বলে ডাকছিলেন তখন শেখ কামাল বলেছিলেন হাসু আপু আমি কি তোমার বাবাকে বাবা ডাকতে পারি ? এই ছিল বঙ্গবন্ধুর সংসার। জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তার সহকর্মীরা রাজনীতি করেছিলেন। রাজনীতি মানুষ ও দেশের তরে অনেকে অকাতরে জীবন দিয়েছেন।’

আওয়ামী লীগকে একবিংশ শতাব্দির একটি দল হিসেবে গড়তে চায় জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যদি থাকতে চায় জনগণকে খুশী রাখতে হবে। তাদের খুশী রাখতে হলে আমাদের বিনয়ী হতে হবে। জনগণ আমাদের ভোট নাদিলে ক্ষমতায় থাকা সম্ভব পর নয়।

দেশ যদি পরিবর্তন করতে হলে একটি দলের ক্ষমতার ধারাবাহিকতা থাকা দরকার। আমাদের সমস্ত আচার আচরণে মানুষ যাতে আমাদের উপর সন্তুষ্ট থাকে। যারা বিএনপি ও তাদের ঘরনার রাজনীতি করেন তাদের সাথে আমাদের কর্মীদের পার্থক্য আছে এবং রাজনৈতিক চেতনা ও উৎকর্ষতা বজায় রাখতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page