করোনা শনাক্তে পিসিআর’র চেয়েও নিখুঁতভাবে করে কুকুর


সকালের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ ৭:০০ : পূর্বাহ্ণ
করোনা শনাক্তে, পিসিআর,কুকুর

ভিন্ন খবর ডেস্ক : : করোনা মহামারী শুরুর পর থেকেই গবেষকরা কুকুরের ঘ্রাণশক্তি ও করোনা শনাক্তের বিষয় নিয়ে কাজ করছিলেন। আগে থেকেই ধারণা ছিলো যে, ঘ্রাণের মাধ্যমে করোনা শনাক্তের ক্ষমতা রয়েছে কুকুরের।

শুরু থেকেই করোনা শনাক্তে কুকুরের ঘ্রাণশক্তি নিয়ে নতুন নতুন সব তথ্য দিচ্ছেন গবেষকরা। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সে বিষয়টি উঠে এসেছে নতুন গবেষণায়।

২০২১ সালের শেষের দিকে, ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এফআইইউ) বিজ্ঞানীরা ক্যানাইন কোভিড শনাক্তকরণের একটি গবেষণা তথ্য প্রকাশ করেছেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী চারটি কুকুরছানা করোনা শনাক্তের ক্ষেত্রে প্রায় ৯৭.৫% নির্ভুল ছিলো।

ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এফআইইউ) ফরেনসিক রসায়নের একজন শীর্ষস্থানীয় পণ্ডিত ডক্টর কেন ফুরটন বলেন, এটি আমার দেখা সর্বোচ্চ শতাংশগুলোর মধ্যে একটি। আমি ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কুকুরদের নিয়ে এই কাজটি করছি। এটি সত্যিই অসাধারণ।

লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, কুকুররা ঘ্রাণের মাধ্যমে ৮২% থেকে ৯৪% ক্ষেত্রে করোনা শনাক্ত করতে পারে।

আর জার্মান গবেষকরা বলছেন, এক্ষেত্রে তাদের পরীক্ষায় সাফল্যের হার প্রায় ৯৫%।

এফআইইউ বিজ্ঞানী ফারটন বিসয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, কুকুরের গন্ধ সাধারণীকরণ করার সক্ষমতা রয়েছে। ফলে বর্তমানে পরিচিত করোনার সব ধরনকেই তারা শনাক্ত করতে পারে। ঠিক যেভাবে প্রশিক্ষণের সময় তারা সমস্ত ধরণের বিস্ফোরক চিনতে পারে।

মহামারীর আগে থেকেই ফসলের রোগ শনাক্ত করার জন্য কুকুরদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিলো ‘বায়ো-ডিটেকশন কে-নাইন’ নামের একটি কোম্পানি।

২০২০ সাল থেকে কোম্পানিটি করোনা শনাক্তে কুকুরদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। রেসিংকার প্রতিষ্ঠান নেসকার এবং দুনিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় রকব্যান্ড মেটালিকাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ গ্রাহককে নতুন এই পরিষেবা প্রদান করছে আসছে কে-নাইন।

কোম্পানির প্রেসিডেন্ট জেরি জনসন বলছেন, অন্যান্য যেকোনো ধরনের তুলনায় ওমিক্রন সংক্রমণের জীববিজ্ঞানকে পরিবর্তন করেছে। ওমিক্রনের আগে জনসন ১৪ টি কুকুরের একটি দলকে মানুষের হাত বা পা শুঁকতে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

যেহেতু ওমিক্রন ফুসফুসে কম আক্রমণ করে ফলে মানুষের হাত, পা বা ঘামের মাধ্যমে এই ভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব। এখন মানুষের উচিত কুকুরকে তাদের পরা মাস্কটি শুঁকতে দেওয়া।

এরইমধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব কুকুরকে করোনা শনাক্ত করার জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। যেমন ম্যাসাচুসেটসের ফ্রিটাউন-লেকভিল আঞ্চলিক স্কুলটি, যারা ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এফআইইউ) এ বিষয় নিয়ে একত্রে কাজ করছে।

তবে কুকুরগুলো এখনও যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদিত কোনো ডায়াগনস্টিক টুল নয়। তাই যদি তারা কাউকে সংক্রামিত হিসাবে চিহ্নিত করলে, সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই এটি নিশ্চিত করার জন্য একটি কোভিড-১৯ পরীক্ষা করতে হবে।

শেষ পর্যন্ত গবেষণাগুলো এটাই ইঙ্গিত করে যে, কুকুরগুলো পিসিআর পরীক্ষার চেয়ে আরও নিখুঁতভাবে করোনা শনাক্ত করতে পারে। সূত্র: একাত্তর।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ