বিষয় :

১২ জন ডাকাত ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজির দু’জন সদস্য আটক


৪ মার্চ, ২০১৯ ৩:৫৪ : অপরাহ্ণ

সকালেরসময় রিপোর্ট:: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় ১২ জন ডাকাত ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) দু’জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে। রোববার (০৩ মার্চ) দিনগত রাত সোয়া ১০টায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধোলাইপাড় এলাকা থেকে ১২ জন ডাকাতকে আটক করে এবং তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে রাত পৌনে ১২টায় রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হুজির দুই সদস্যকে আটক করেন গোয়েন্দারা।

আটক ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন- মোফাজ্জল হোসেন ওরফে বড় ভাই ওরফে দাদু (ডাকাত সর্দার), মোহাম্মদ জহির উদ্দিন ভূঁইয়া ওরফে চৌধুরী, মো. আতিকুর রহমান, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ওরফে নয়ন, লাড্ডু মোল্লা, কাইয়ুম শিকদার, আলাউদ্দিন শেখ, মুন্সি খসরুজ্জামান মেজর ওরফে মেজর, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হাওলাদার, সুব্রত দাস, মিন্টু কর্মকার এবং অলিউল্লাহ হাওলাদার অলি।

সোমবার (০৪ মার্চ) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন জানান, আটককৃত ডাকাতরা মূলত টার্গেট করতো নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে এমন ব্যক্তিদের। ডাকাতির পরিকল্পনা করতো হুজি আর বাস্তবায়ন করতো ডাকাতরা। আটকদের বরাতে তিনি জানান, এ পর্যন্ত ৯টি ডাকাতি করে ৫ কোটি টাকা লুণ্ঠনের কথা স্বীকার করেছে তারা। আর ডাকাতি থেকে প্রাপ্ত অর্থের ৩০ ভাগ সংগঠনের কাজে ব্যয় করে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটককৃতরা ধোলাইপাড়ে পূবালী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডকে জিম্মি করে ডাকাতির পরিকল্পনায় জড়ো হয়েছিল।

আব্দুল বাতেন বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহের ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানিতে (বিএটিবিসি) ডাকাতির চেষ্টাকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা এক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। ডাকাত দলের সদস্যরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে এর আগে বিভিন্ন মেয়াদে জেলে ছিলেন। আটক ডাকাত মো. আতিকুর রহমানের দেওয়া তথ্যমতে রামপুরার বাসা থেকে অস্ত্রসহ হুজি সদস্যকে আটক করেন গোয়েন্দা সদস্যরা।

আব্দুল বাতেন আরও বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জঙ্গি উজ্জলের নির্দেশে ও সংগঠন পরিচালনা করার লক্ষ্যে কাশিমপুর কারাগারে অবস্থানরত উজ্জ্বলকে যেকোনো উপায়ে মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কারণে এই সংগঠনগুলো পরিচালনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে আর্থিক সক্ষমতা ছিল তা আগের মতো না থাকায় তারা ডাকাত দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ডাকাতি থেকে লুণ্ঠিত অর্থ সংগঠনের কাজে ব্যয় করে আসছিল।

আটক হুজি সদস্যদের একজন হলেন- হাফিজ ওরফে খালিদ ওরফে ইব্রাহিম গাজী। অপর সদস্য মামুনুর রশিদ ওরফে বাচ্চু মোল্লা। তাদের কাছ থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি বিদেশি একে- ২২ বোরের রাইফেল, একটি পাইপগান, ৪১ রাউন্ড গুলি, ১২টি জিহাদি বই, গান পাউডার, ককটেল, পাঁচটি কালো রঙের মুখোশ ও সংগঠন পরিচালনা করার কাজে ব্যবহৃত ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। আর ডাকাত দলের কাছ থেকে চারটি বিদেশি পিস্তল ৩৩ রাউন্ড গুলি, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ মুখোশ, চাপাতি, ছুরি, কাটার, হেক্সো ব্লেড, স্লাইড রেঞ্জ ও স্কচটেপ উদ্ধার হয়। আটকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী, অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির মামলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page