বিষয় :

রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে পাশে থাকবে: ভিয়েতনাম


৫ মার্চ, ২০১৮ ২:১৫ : পূর্বাহ্ণ

সকালেরসময় ডেস্ক::  ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রান দাই কুয়াং রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার নিজের কার্যালয়ে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।

মিয়ানমারের রাখাইনের গতবছর ২৫ অগাস্ট নতুন করে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইনের গ্রামে গ্রামে হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নি সংযোগের ভয়াবহ বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের কাছ থেকে। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর এই কর্মকাণ্ডকে জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে চিহ্নিত করলেও দেশটির সরকার বলে আসছে, এটা ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করলেও প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বাংলাদেশ ভিয়েতনামের সমর্থনও চেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি ত্রান দাই কুয়াং কার্যকর ও স্থায়ী সমাধানের জন্য তার সমর্থন জানিয়েছেন।

ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট সকাল ১০টায় ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। দুই নেতার মধ্যে একান্ত বৈঠক শেষে শুরু হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। সেখানে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা, ভিয়েতনামের পক্ষে তাদের রাষ্ট্রপ্রধান ত্রান দাই কুয়াং। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে দুই নেতার উপস্থিতিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, যন্ত্র প্রকৌশল খাতে সহযোগিতাসহ তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এই সমঝোতা স্মারকের ফলে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। আসিয়ান জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সরকারের আগ্রহের কথা জানিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতি সংস্থার ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হতে ভিয়েতনাম সরকারের সমর্থন চান শেখ হাসিনা।

১৯৬৭ সালের ৮ অগাস্ট ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডকে নিয়ে এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ব্রুনেই, কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতি সংস্থার সদস্যপদ পায়। গঙ্গা অববাহিকার দেশ হিসাবে ‘মেকং-গঙ্গা সহযোগিতা ফোরামে’ যোগ দিতেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ভিয়েতনামের সহযোগিতায চান শেখ হাসিনা।

ভিয়েতনামকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসাবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, শান্তি ও উন্নয়ন- দুই দেশের এ দুটি লক্ষ্য অভিন্ন। সামরিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামের জনগণের সংগ্রাম বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ