সকালেরসময় ডেস্ক :: হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত সীমান্ত জেলা দিনাজপুরসহ শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ। শৈত্য প্রবাহে ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন।
দিনাজপুরে আজ রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ এবং যা গত দু’বছরের চেয়ে সর্বোচ্চ কম। গত ৫ দিনে শৈত্য প্রবাহে ক্রমেই নেমে আসছে তাপমাত্রা। বাড়ছে শীতের তীব্রতা। শীতজনিত বিভিন্ন রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বোরো’র বীজতলা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, দিনাজপুরে আজ রোববার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ এবং যা গত দু’বছরের চেয়ে সর্বোচ্চ কম।
২০১৩ সালে একবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়েছিলো ৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার বিকেলে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ পর্যন্ত এটিই এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলায় গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গত বৃহস্পতিবার ছিলো (৪ জানুয়ারি) ৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শৈত্য প্রবাহ আর হিমেল হাওয়ায় দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলে অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। তীব্র শীতে হত দরিদ্র, ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে চরমে। তীব্র শীত অনুভূত হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিশেষ করে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। প্রচণ্ড শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ায় সন্ধ্যা হলেই দিনাজপুর শহরসহ গ্রামাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না মানুষ।
গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। এ অবস্থায় কাজে বের হতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করছে তারা। খড়-কুটা জ্বালিয়ে একটু তাপ নিতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এমন দৃশ্য প্রায় চোখে পড়ছে দিনাজপুরে। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। এদিকে শিশু ও বৃদ্ধারা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে। নিউমোনিয়া, আমাশয়, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট সহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে শীতবস্ত্রের আশায় হত দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ চেয়ে আছে। বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। দিনাজপুরসহ অন্যান্য এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসলে এসব ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করেন দিনাজপুরবাসি।