হালদা দূষণের দায়ে এশিয়ান পেপার মিলের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ! 


সকালের-সময় রিপোর্ট ১৮ আগস্ট, ২০১৯ ৫:০৯ : অপরাহ্ণ

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীর এশিয়ান পেপার মিলস লিমিটেডকে উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন অধিদফতরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক।

সকালের-সময়কে বিষয়টি নিশ্চিত করে আজাদুর রহমান মল্লিক জানান, স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে গত ১৪ আগস্ট পরিবেশ অধিদফতরের একটি টিম হাটহাজারীর এশিয়ান পেপার মিলস (প্রা.) লিমিটেডের কারখানা সরেজমিন পরিদর্শন করে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। আজ প্রতিষ্ঠানটিকে শুনানিতে অংশ নেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। শুনানি শেষে কারখানাটিকে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়।

তিনি আরও জানান, সরেজমিন পরিদর্শনে বাইপাসের মাধ্যমে তরল বর্জ্য অপসারণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। শুনানিতে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ইটিপির ত্রুটি সংশোধন করে সার্বক্ষণিক ও কার্যকরভাবে চালুর পদক্ষেপ নেয়াসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবং এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত রোববার (১১ আগস্ট) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এশিয়ান পেপার মিলের ছাড়া ময়লা পানির নমুনা নিয়েছিলেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন। এশিয়ান পেপার মিল যে রাতের আঁধারেই ময়লা পানি ছেড়ে দেয় হালদায় এর স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে ইউএনওর সরেজমিন পরিদর্শনে।

বন্দরনগরী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকার নন্দীরহাটে এশিয়ান পেপার মিলের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে একুতি ছড়া (মরা খাল)। তা আবার হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কাটাখালি, খন্দকিয়া, বাথুয়া, মাদারি ও কৃষ্ণখালী খাল ধরে হালদা নদীতে গিয়ে মিশেছে।

কারখানার অপরিশোধিত প্রাণঘাতী বর্জ্য এসব খালের মাধ্যমে মিঠা পানির রুইজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে গিয়ে পড়ে। এতে নদীর জীববৈচিত্র্য ও নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলছে। ১২ বছর ধরে এভাবে দূষিত হচ্ছে হালদা নদী। চট্টগ্রামের পরিবেশ অধিদফতরের একজন কর্মকর্তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে প্রতিষ্ঠানটি এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

দেখা গেছে, ঈদে মানুষের ব্যস্ততার সুযোগে পানি ছেড়ে দেয় এশিয়ান পেপার মিল। সংগৃহীত নমুনা পরিবেশ অধিদফতরে পাঠান ইউএনও রুহুল আমিন। এর আগে গত ৩০ মে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা দূষণের অভিযোগে হাটহাজারীর এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page