হাটহাজারীর সেই সাব রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তার বরখাস্ত


নিজস্ব প্রতিবেদক ৯ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:১৩ : পূর্বাহ্ণ

হাটহাজারী সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার (সিলেট জেলা সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার) পারভীন আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আইন ও বিচার বিভাগ, বিচার শাখা-৬ এ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সচিব গোলাম সরোয়ার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, সাবেক সাব রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তারের বিরুদ্ধে সিনিয়র স্পেশাল জজ, সিলেট মহানগর স্পেশাল: ০৬/২০২০ নম্বর মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণকরতঃ দণ্ডবিধি-এর ৪২০/৪০৬/৪০২/০৬/৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং The Prevention of Corruption Act, 1947 এর 5(2) ধারার অপরাধ আমলে গ্রহণ করেন, সেহেতু অভিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তারকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর খারা ৩৯(২) মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

তিনি সাময়িক বরখাস্তকালীন নিবন্ধন অধিদপ্তর-এ সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি মোতাবেক ভাতাদি প্রাপ্ত হবেন এবং জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য—দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় গত ১৮ অক্টোবর সিলেট কারাগারে বন্দি হন হাটহাজারী উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তার। পরে সাব-রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তার গত ২৫ অক্টোবর বুধবার জামিনে মুক্তি পেয়ে ২৯ অক্টোবর রবিবার থেকে পুনরায় অফিস শুরু করেন।

২০২১ সালের ১৮ জুন পারভিন আকতার হাটহাজারী সদরের সাব রেজিস্ট্রার হিসাবে যোগদান করেন। তিনি এই অফিসে যোগদানের পর অফিস সহকারী দিদারুল আলমের যোগ সাজসে সরকারি নিয়ম লংঘন করে দলিল রেজিস্ট্রেশনসহ নানা অনিয়ম দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

এর আগে পারভিন আক্তার ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে জমির শ্রেনী পরিবর্তন করে রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে ১৭ অক্টোবর দুদকের মামলায় সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক এ.কিউ.এম নাসির উদ্দিন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তখন দুদকের আইনজীবী লুৎফুর কিবরিয়া শামীম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২০২০ সালে সিলেট সদর সাব-রেজিস্টার এলাকাধীন একটি কোম্পানির নামে থাকা ১৫ একর জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ব্যক্তি মালিকানা ও টিলা শ্রেণি দেখিয়ে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ১২টি দলিল রেজিস্ট্রেশন করেন তিনি।

তাতে ১ কোটি ২৬ লাখ ৩৯ হাজার ২২৯ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় সরকার। এনিয়ে কোম্পানির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বাদী হয়ে ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি দলিলদাতা ও সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তারসহ ২২ জনকে আসামি করে সিলেট মহানগর বিশেষ জজ আদালতে মামলা করেন।

তিনি আরও বলেন, আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেয়। ওই মামলায় সাব- রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তার আত্মসমর্পণ করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে ওই কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানা যায়, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পূর্বে সাব-রেজিস্টার পারভিন আক্তার ওই বছরে ১৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী সাব-রেজিস্টার অফিসে যোগদান করেন।

আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত ১৫ অক্টোবর রবিবার অফিস শেষে সাব-রেজিস্টার পারভিন আক্তার হাটহাজারী থেকে একদিনের ছুটি নিয়ে সিলেট যান। পরদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত পারভিনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এসএস/ফোরকান

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page