হত্যার পর শরীরের মাংস-হাড়-কেটে আলাদা করে সহকর্মীরা


নিউজ ডেস্ক  ২ অক্টোবর, ২০২৩ ১০:২৮ : পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের রাউজানে কলেজ ছাত্রকে হত্যার পর শরীরের মাংস-খণ্ড ও হাড়-গোড় আলাদা করে পাহাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখার ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এ নিয়ে পুলিশ ও র‌্যাব মিলে ঘটনায় জড়িত সাতজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছে।

আসামিদের জবানবন্দি তুলে ধরে র‌্যাব বলছে, এ হত্যায় উমংচিং মারমাসহ অন্তত ৯-১০ জন সহযোগী অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে র‌্যাব ২জন ও পুলিশ ৫ জনসহ মোট ৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে এবং অবশিষ্ট আসামিদের গ্রেপ্তারের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর আগে পাহাড়িরা হৃদয়কে হত্যা করে খেয়ে ফেলেছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। এমন বীভৎস হত্যাকাণ্ডে এলাকায় এখনও শোকের ছায়া।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযান চালিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে উচিংথোয়াই মারমাকে (২৩) গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল ৫টার দিকে আসামি ক্যাসাই অং চৌধুরীকে (৩৬) নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি দিয়েছে বলে দাবি করছে র‌্যাব। এ দুই আসামির বয়ানে উঠে এসেছে কদলপুরের হৃদয়কে হত্যার কারণ, হত্যার বর্ণনা ও মরদেহ গুমের ভয়ংকর বর্ণনা।

রোববার র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, ‘মুরগিকে পর্যাপ্ত খাবার না দিয়ে বিক্রি করে দিতো খামারে কর্মরত শ্রমিকরা। এ নিয়ে প্রতিবাদ করে পোল্ট্রি খামারের ম্যানেজার শিবলী সাদিক হৃদয় (১৯)। এ কারণে খামারে কর্মরত ওই শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বাগবিতণ্ডাও হয় তার। তখন থেকে শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নেয়- হৃদয়কে উচিৎ শিক্ষা দেবে। এ জন্য তাকে খামার থেকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়।

গ্রেপ্তার উচিংথোয়াই মারমা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, হৃদয়কে অপহরণের একদিন পর ২৯ আগস্ট বিকালে রঙিন পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে হত্যা করা হয়। উচিংথোয়াই মারমা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় । তার সহযোগী ক্যাসাই অং চৌধুরীসহ আরও চারজন হৃদয়ের হাত-পা এবং মুখ চেপে ধরে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছিল শুধুমাত্র যারা খামারে কাজ করতো-তারাই।

এদের মধ্যে উমংচিং মারমা ও অং থুই মারমা হৃদয়কে অপহরণের পরিকল্পনা করে। উচিংথোয়াই মারমা তার অন্যতম সহযোগী ক্যাসাই অং চৌধুরীকে বান্দরবান থেকে চট্টগ্রামে কাজ আছে বলে ডেকে আনে। তাদেরকে দিয়ে হৃদয়কে হত্যা করা হয়। এরপর তারা মরদেহের শরীর থেকে মাংস-কেটে আলাদা করে ফেলে দেয় এবং হাড়গোড় আরও কয়েকটি পাহাড়ের পর আরেকটি গহীন পাহাড়ের জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে চলে আসে।

মাংস খাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে র‌্যাব-৭ এর এই কর্মকর্তা জানান, হৃদয়কে হত্যার পর মাংস খেয়ে ফেলেছে- এমন একটি খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা বলেছে, এ ব্যাপারে তারা জানে না। তবে শরীরের মাংস আলাদা করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল এটি সত্য। মাংস খাওয়ার বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page