স্ত্রী-সন্তানদের হাতেই আট টুকরা হন প্রবাস ফেরত হাসান


নিউজ ডেস্ক  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১১:৫৭ : পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায় ঝোপের আড়ালে পড়ে থাকা ট্রলি ব্যাগে পাওয়া মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। ট্রলিতে পাওয়া খণ্ডাংশগুলো মো. হাসান (৬১) নামে বাঁশখালীর এক ব্যক্তির। উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে তিনি। ২৭ বছর ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন হাসান।

সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় স্ত্রী সন্তানেরা পরিকল্পিতভাবে লাশ টুকরো টুকরো করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেন, পরিচয় না পেয়ে যেন হত্যাকাণ্ডের রহস্য গোপন থাকে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে। উদ্ধার হয়েছে নিহত হাসানের বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ উদ্ধার। মাথার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পিবিআই।

ঘটনার পর থেকে হাসানের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান পিবিআইয়ের হেফাজতে থাকলেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি পলাতক বলে পিবিআই জানিয়েছে।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ২৭-২৮ বছর ধরে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল হাসানের। সম্প্রতি তিনি ফিরে আসলে বাঁশখালীতে থাকা পৈতৃক সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে দিতে চাপ দেন স্ত্রী সন্তানরা। কিন্তু তিনি দিচ্ছিলেন না।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেইট এলাকার জমির ভিলার ৭ নম্বর বাসায় চিকিৎসার নামে হাসানের স্ত্রী চট্টগ্রাম শহরে ছোট ছেলের বাসায় আসেন। ঘটনার দিন বড় ছেলে মোস্তাফিজুরও সেই বাসায় যান। হাসানকেও ডেকে নেওয়া হয়। রাতে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।

এর একপর্যায়ে স্ত্রী, দুই ছেলে এবং ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করে। ঠাণ্ডা মাথায় লাশ কেটে টুকরো করে ট্রলিব্যাগে করে আট টুকরো ফেলা হয় পতেঙ্গা ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় খালে। মাথা এবং বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে। ছোট ছেলেই তার বাবার শরীরের টুকরোগুলো বিভিন্নস্থানে ফেলেন।

গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেইটে ট্রলিব্যাগটি পাওয়া যায়। কফি রঙের ট্রলিব্যাগে ছিল মানব শরীরের ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে এক বা একাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) একেএম মহিউদ্দিন গণমাধ্যমে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page