চট্টগ্রাম-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী

রুহেলের ব্যবসা থেকে আয় নেই, আছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ


নিজস্ব প্রতিবেদক ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১০:১৩ : অপরাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহবুব রহমান রুহেলের ঢাকা, গাজীপুর ও কক্সবাজারের ১০টি স্থানে কয়েক কোটি টাকার জমি আছে। এমবিএ পাস করা এই প্রার্থীর পেশা ব্যবসা হলেও সেখান থেকে তার বার্ষিক কোনও আয় নেই।

এই প্রার্থীর হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামায় এসব সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। এতে প্রার্থী ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। মাহবুব রহমান রুহেল চট্টগ্রাম-১ আসনের বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের মেজো ছেলে। বাবার আসনে এবার ছেলেকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তিনি গ্যাসমিন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

মাহবুব রহমান রুহেল হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ, পেশা ব্যবসায়ী। ঢাকা, গাজীপুর ও কক্সবাজারের ১০টি স্থানে কয়েক কোটি টাকার জমি আছে। তবে ব্যবসা থেকে বার্ষিক কোনও আয় নেই। বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা আয়। ব্যবসা পেশায় নির্ভরশীলদের আয় ২০ লাখ টাকা।

শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংকে আমানত আছে, সেখান থেকে আয় এক লাখ ৪৫ হাজার ২০৫ টাকা। চাকরি থেকে তার নির্ভরশীলদের আয় ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, অন্যান্য খাতে নিজের আয় ৯৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৩২ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষিজমি আছে। এর মধ্যে গাজীপুরে ৩০ লাখ টাকার ৬৬ শতক এবং কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে ৮৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকার সাত একর জমি আছে।

পাশাপাশি অকৃষি জমির মধ্যে টেকনাফের সেন্টমার্টিনে চার লাখ ৫৯ হাজার ৬০০ টাকার ২৪২ শতক, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৩৮ লাখ ১৪ হাজার ৪৭৩ টাকার ১০ কাঠা জমি, রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার ১০ কাঠা জমি, গাজীপুরে সাত লাখ ১৫ হাজার টাকার ৩৫ শতক ও একই এলাকায় ১০ লাখ ১৫ হাজার টাকার ৩৫ শতক জমি আছে।

এছাড়া বসুন্ধরা বাণিজ্যিক এলাকায় ২০ লাখ টাকার দালান, একই এলাকায় ৪১ লাখ ১৩ হাজার টাকার ২১৩৫ বর্গফুটের আরেকটি অ্যাপার্টমেন্ট, গুলশান আবাসিক এলাকায় সাত কোটি ৫০ লাখ টাকার পাঁচ হাজার ৯০ বর্গফুটের আরেকটি জায়গা আছে।

হলফনামায় তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, নিজের নামে এক কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজার ৩৩৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। পাশাপাশি স্ত্রীর নামে ২৭ লাখ সাত হাজার ৩০০ টাকার ও নির্ভরশীলদের নামে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।

বৈদেশিক মুদ্রা আছে ১৭ হাজার ১৭১ ডলার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ৫১ লাখ সাত হাজার ৭৩৯ টাকা, বন্ড ঋণপত্র স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার পাঁচ কোটি ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৫৫ টাকা। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে আছে তিন কোটি ছয় লাখ আট হাজার ৪০০ টাকা ও নির্ভরশীলদের নামে ৫০ লাখ ৬০ হাজার ১৬০ টাকা। পোস্টাল সেভিংস আছে স্ত্রীর নামে ৪৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪০ টাকা ও ১০ লাখ টাকা দামের একটি গাড়ি আছে।

নিজের নামে দুই লাখ টাকার স্বর্ণ, স্ত্রীর নামে চার লাখ টাকার ও নির্ভরশীলদের নামে আছে ৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকার স্বর্ণ। নিজের নামে তিন লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, স্ত্রীর নামে এক লাখ ও নির্ভরশীলদের নামে পাঁচ লাখ টাকার সামগ্রী আছে। নিজের নামে তিন লাখ টাকার আসবাবপত্র, স্ত্রীর নামে এক লাখ ও নির্ভরশীলদের নামে পাঁচ লাখ টাকার অন্যান্য সম্পদ আছে।

হলফনামায় দেওয়া তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, ‌‌‌‌‍হলফনামায় দেওয়া তথ্য শতভাগ সত্য। আমাদের পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গ্যাসমিন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমি। ওখান থেকে আমার একটি বেতন ধরা হয়েছে।

আমার নামে যে জমিগুলো কেনা আছে, সেগুলো বাবা আমার নামে কিনেছেন। জমিগুলো ২০-২৫ বছর আগে কেনা। বসুন্ধরা, পূর্বাচল ও গুলশানসহ বিভিন্ন জায়গার জমিগুলোর যে দাম হলফনামায় আছে, তা কেনার সময়কার দাম। বর্তমান বাজারমূল্য নয়।

সূত্র—বিটি/এসএস/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page