ফেঁসে যাচ্ছেন ডা: ফজলে রাব্বি–দুদকে মামলার সুপারিশ


নিজস্ব প্রতিবেদক ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১১:৫০ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার বিলে ব্যয় মঞ্জুরিপত্র ছিল না। সেটি জালিয়াতি করে জমা দেওয়া হয় বিল। জালিয়াতির এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। ডা. রাব্বিসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলার সুপারিশ করেছে দুদক চট্টগ্রাম অফিস। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল এবং দুদকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের (আইসিইউ) আটটি শয্যা, ভেন্টিলেটর ও কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটরসহ প্রায় ১৫ কোটি টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল।

ঠিকাদার যন্ত্রপাতি সরবরাহের পর সেগুলো মানসম্মত না হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে সমালোচনা তৈরি হলে কিছু যন্ত্রপাতি সংযোজন ছাড়াই দীর্ঘদিন হাসপাতালের গোডাউনে ফেলে রাখা হয়। এরমধ্যে ৮টি আইসিইউ বেড, ৮টি আইসিইউ ভেন্টিলেটর এবং একটি কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটর। এসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে ঢাকার পল্লবীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজ। পরবর্তীসময়ে এসব যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়ম অনুসন্ধানে দুর্নীতির সত্যতা পায় দুদক।

যন্ত্রপাতি ক্রয়ে প্রায় ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই সময়ের সিভিল সার্জন (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) ড. সরফরাজ খান চৌধুরী, হাসপাতালের তিন ডাক্তার এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চারজনসহ আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।

এরপর ২০২০ সালের শুরুতে দেশে করোনা মহামারি শুরু হলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালকে ১০০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড ঘোষণা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এসময় সারাদেশে আইসিইউ সংকটের মধ্যে ওই হাসপাতালের গোডাউনে পড়ে থাকা যন্ত্রপাতিগুলো জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের উদ্যোগ নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। পাশাপাশি ওই সময়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী (বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী) এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে সভাপতি করে গঠিত একটি কমিটি ২০২০ সালের ১৯ মে আলোচনার মাধ্যমে এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত দেন। যথারীতি এসব যন্ত্রপাতি জেনারেল হাসপাতালে সংযোজন করা হয়।

এ সুযোগে এসব যন্ত্রপাতির বকেয়া থাকা ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিল দাবি করেন ঠিকাদার। ঠিকাদারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিলের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে ব্যয় মঞ্জুরি প্রদান করা হয়নি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে উপ-পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগ দেন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। এর আগে তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের দায়িত্বে।

এদিকে ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিল পরিশোধের জন্য ব্যয় মঞ্জুরিপত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তারপরও মন্ত্রণালয় পত্র প্রদান না করলে ২০২১-২২ অর্থবছরের মধ্যেই ঠিকাদারকে বিল পরিশোধে উদ্যোগী হয় জেনারেল হাসপাতাল। যথারীতি ২০২২ সালের ২৮ জুন বিলটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিসে উপস্থাপন করা হয়। বিলের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয় একটি ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র।

মূলত বিলের সঙ্গে থাকা ব্যয় মঞ্জুরিপত্রটি বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিস ভুয়া দাবি করায় বিপত্তির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। তবে সরকারি বিলে ডকুমেন্ট জালিয়াতির বিষয়টি দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী ৩০ জুন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ লিখিত অভিযোগ দেন হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক।

ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিলের সঙ্গে যুক্ত ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্রটি যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী ঠিকাদার মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মুন্সি ফারুক হোসেন, তাদের অফিস স্টাফ সাজ্জাদ হোসেন ও মুকিত মণ্ডল এবং হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ফোরকান পরস্পর যোগসাজশে তৈরি করেছেন।

এরপর দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে অভিযোগটি অনুসন্ধান করে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১। ওই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে দুদকে অভিযোগকারী বাদী আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বিকেও আসামি করার সুপারিশ করা হয়।

প্রতিবেদনে মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মুন্সী ফররুখ হোসাইন ওরফে মুন্সি ফারুক, তার ভাই মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন, তাদের অফিস স্টাফ মুকিত মণ্ডল, জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফোরকান এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র সৃজনপূর্বক তা খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে দণ্ডবিধির ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯, ৫১১ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর সুপারিশ করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মুন্সি ফারুকের সহোদর মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন তার হোয়াটসঅ্যাপ মোবাইল নম্বর থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সুশীল কুমার পাল স্বাক্ষরিত চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার, সেগুনবাগিচা বরাবর প্রেরিত একটি ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র (স্মারক নং-৪৫.০০.০০০০.১৩৯.১২৯.২০২১/৪৫৯ তারিখ ২৬/০৬/২০২২ খ্রি.) চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ ফোরকানের মোবাইল নম্বরে প্রেরণ করেন।

মোহাম্মদ ফোরকান ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্রটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির মোবাইলে ফরোয়ার্ড করেন। এছাড়া ২৮ জুন আহমেদ এন্টারপ্রাইজের অফিস সহকারী মুকিত মন্ডল জেনারেল হাসপাতালে আসেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মুন্সি ফারুক, তার সহোদর সাজ্জাদ মুন্সি, অফিস সহকারী মুকিত মণ্ডল, জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফোরকান ও ডা. সেখ ফজলে রাব্বি পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরি সৃজন করে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি একক স্বাক্ষরে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার একটি বিল প্রস্তুত করেন।

বিলটি পাস করার জন্য একই দিনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিস বরাবরে প্রেরণ করেন। বিলটি অনুস্বাক্ষরবিহীন ছিল। চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিস কর্তৃক বিলটি যাচাই-বাছাইকালে অর্থ বরাদ্দপত্রে পৃষ্ঠাঙ্কন না থাকা, বরাদ্দপত্রটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় না আসা অর্থাৎ পত্রটি চট্টগ্রামের হিসাবরক্ষণ অফিস বরাবর না হয়ে, হিসাবরক্ষণ অফিস সেগুনবাগিচা বরাবর হওয়াসহ সার্বিক পর্যালোচনায় জিওটি ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করে এবং বিলটি বাতিলপূর্বক ফেরত প্রদান করেন।

ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্রে যে স্মারকটি (স্মারক নং-৪৫.০০.০০০০.১৩৯.১২৯.২০২১/৪৫৯ তারিখ ২৬/০৬/২০২২ খ্রি.) ব্যবহার করা হয়েছে সেটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং খাতে নিয়োজিত জনবলের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য বরাদ্দ আদেশের স্মারকটি ব্যবহার করে সুশীল কুমার পালের স্বাক্ষর জাল কিংবা স্ক্যানিং করে চিকিৎসা যন্ত্র ব্যয় মঞ্জুরির ভুয়া ও অবৈধ আদেশ দাখিল হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা হলে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ২০২২ সালের জুন মাসে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার একটি বিলের ব্যয় মঞ্জুরিপত্র জালিয়াতির বিষয়ে দুদকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি দুদক এখনো অনুসন্ধান করছে। তবে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে কি না, সেটি আমার জানা নেই। দুদক কর্মকর্তারা কিছুদিন আগেও আমাকে জানিয়েছেন, তারা এখনো বিষয়টি অনুসন্ধান করছেন।

এ ব্যাপারে কথা হলে জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ফোরকান বলেন, ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্রের ঘটনাটি ২০২২ সালের ২৮ জুনের। ওই দিনটি ছিল অর্থবছরে সরকারি বিল ছাড় করার শেষ দিন। হাসপাতালের অনেক বিল ছাড়ের বিষয় থাকায় আমি বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিসে ছিলাম। ওইদিন দুপুর ২টা ১৩ মিনিটে বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমি হাসপাতাল ত্যাগ করি। দুপুর আড়াইটার দিকে ঠিকাদারের লোক সাজ্জাদ মুন্সি আমার হোয়াটস অ্যাপে আলোচিত সেই ব্যয় মঞ্জুরিপত্রের কপিটি পাঠান। তখন সেটি আসল না নকল, তা আমার পক্ষে যাচাই করা সম্ভব ছিল না। এ কারণে আমি তাৎক্ষণিক এটি তত্ত্বাবধায়ক স্যারের হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিই।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমাকে বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ডেকে পাঠালে আমি বিল সম্পর্কে জানতে পারি। হিসাবরক্ষণ অফিসে উপস্থাপিত বিলে আমার স্বাক্ষরও ছিল না। বিলটি অন্য আরেকজন কর্মচারী দিয়ে তৈরি করা। বিলটিতে তত্ত্বাবধায়ক স্যার একাই সই করেন। পরে যখন পত্রটি ভুয়া প্রমাণিত হলো, তখন তত্ত্বাবধায়ক স্যার আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন। দুদিন পরে আমার কাছ থেকে জোর করে বিলের অফিস কপিতে সই নিয়েছেন। এটার প্রমাণ আমার হাতে রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক স্যার নিজেকে রক্ষায় দুদকে দেওয়া অভিযোগে আমার নাম জুড়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের অফিসের ওই তারিখের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সেদিন আমি হিসাবরক্ষণ অফিসে চলে যাওয়ার পর বিকেল ৪টার দিকে ঠিকাদারের দুই প্রতিনিধি তত্ত্বাবধায়ক স্যারের সঙ্গে অফিসে দেখা করে গেছেন। সে ফুটেজও আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। দুদক যদি আমার বিরুদ্ধে মামলা করে, তাহলে সেসব ডকুমেন্ট আমি আদালতে উপস্থাপন করবো। আমি নির্দোষ।

এ ঘটনায় আমাকে বদলি করা হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে আমাকে পুনরায় পদায়ন করা হয়। তখন থেকে আমার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। আদালত আমার বেতন-ভাতা পরিশোধের আদেশও দিয়েছেন। স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের অফিস থেকেও আমার বেতন-ভাতা পরিশোধের লিখিত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক স্যার আদালতের নির্দেশনা না মেনে আমার ১৯ মাসের বেতন-ভাতা আটকে রেখেছেন।

হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার এই বক্তব্যের বিষয়ে পুনরায় জানতে চাওয়া হলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্রের বিষয়টি যেহেতু দুদকে তদন্তাধীন, সেহেতু আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না।

হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা তার বেতন আটকে রাখার যে অভিযোগটি তুলেছেন, সে বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক বলেন, ‘ওনার (ফোরকান) পুনঃপদায়নের আদেশটি উচ্চ আদালতের। কিন্তু বেতন-ভাতা পরিশোধের বিষয়ে অধিকতর নিম্ন আদালতের একটি আদেশ এনেছেন। আমরা আদালতের ওই বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ এখনো বিষয়টি বিবেচনা করেননি। তারা (ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ) বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপর আদালত যে নির্দেশনা দেবেন, সে অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেবো।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুদক চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. সফিকুর রহমান ভূইয়া বলেন, আমি এ কার্যালয়ে নতুন এসেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু জানি না।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার বিলের ব্যয় মঞ্জুরিপত্র জালিয়াতির বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, ঠিকাদার ও তার দুই প্রতিনিধি মিলে পাঁচজনকে আসামি করার সুপারিশ করে কমিশন বরাবর প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। কমিশনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত এখনো পাওয়া যায়নি।

সূত্র—জেএন/এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ