সাফল্যের মুকুটে যুক্ত হচ্ছে চট্টগ্রামে আরও একটি পালক


নিজস্ব প্রতিবেদক ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১:০২ : অপরাহ্ণ

একের পর এক মেগা উন্নয়ন প্রকল্পে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের সাফল্যের মুকুটে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি পালক। আরও একটি যুগান্তকারী উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ২৮ অক্টোবর। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রামে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম নদীর তলদেশে টানেল। এদিন বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন এক চট্টগ্রামকে দেখতে পাবে বিশ্ব।

বঙ্গবন্ধু টানেল এখন যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। পূর্তকাজের পাশাপাশি যান্ত্রিক, বৈদ্যুতিক এবং সৌন্দর্যবর্ধনের যাবতীয় কাজসহ সব ধরনের কর্মযজ্ঞ শেষ করে যানবাহন চালিয়ে একাধিকবার ট্রায়ালও সম্পন্ন হয়েছে সফলভাবে।

বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ জানান, বঙ্গবন্ধু টানেল এখন পুরোপুরি ব্যবহার উপযোগী। টানেলের প্রি-কমিশনিং এবং কমিশনিং ইতোমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। টানেল ব্যবহার উপযোগী করতে এবং এর ভেতর দিয়ে নিরাপদে যানবাহন চলাচলের জন্য ৭টি সিস্টেম রয়েছে।

সবগুলো সিস্টেমের সফল কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন টানেলের ভেতর দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। টানেল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) অক্টোবর মাসের শুরুতেই টানেলটি হস্তান্তর করবে। ইতোমধ্যে টানেলে যানবাহন চলাচলের জন্য টোল হারও নির্ধারণ করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা-দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার সাথে সংযোগ করে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দুটি পৃথক টিউবে এই টানেল নির্মিত হয়। সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নদীর তলদেশে নির্মিত এটিই প্রথম টানেল।

কর্ণফুলীর দুই তীরকে সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেল প্রকল্প গ্রহণ করে বর্তমান সরকার। পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলীর অপর প্রান্তে আনোয়ারা পর্যন্ত দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। নদীর এক প্রান্ত থেকে টানেলের ভেতর দিয়ে অপর প্রান্তে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ ৬ মিনিট সময় লাগবে।

বঙ্গবন্ধু টানেলের যানবাহন চলাচলের প্রস্তাবিত টোল হার

৩.৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু টানেলে মোট ১২ ধরনের যানবাহন টোল দিয়ে পারাপার হতে পারবে। এর মধ্যে প্রাইভেট কার পারাপারে সর্বনিম্ন টোল ধরা হয়েছে ২০০ টাকা। এ ছাড়া, প্রতিবার পিকআপ পারাপারে টোল ২০০ টাকা। মাইক্রো বাসের টোল ২৫০ টাকা। ৩১ আসনের কম বাসের টোল ৩০০ টাকা। ৩২ আসনের বেশি বাসের টোল ৪০০ টাকা। তিন এক্সেল বিশিষ্ট বড় বাসের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা।

পাঁচ টন পর্যন্ত পণ্য বহনে সক্ষম ট্রাকের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। আট টনের ট্রাক পারাপারে ৫০০ এবং ১১ টনের ট্রাকে ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে। তিন এক্সেলের কনটেইনারবাহী ট্রেইলারে টোল লাগবে ৮০০ টাকা। চার এক্সেলের ট্রেইলারে দিতে হবে এক হাজার টাকা।

পরবর্তী প্রতি এক্সেলের জন্য বাড়তি দিতে হবে ২০০ টাকা। টানেল যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার দিন থেকে এই টোল হার কার্যকর হবে।
টানেলের ভেতর দিয়ে কোনও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। চলতে পারবে না কোনও থ্রি-হুইলার যানসহ রিকশা-সাইকেল।

সূত্র—আরবিডি

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page