ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতা বিক্রেতাদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে

জমে উঠেছে ঈদ বাজার!


সকালেরসময় রিপোর্ট  ২২ মে, ২০১৯ ৬:৫৮ : পূর্বাহ্ণ

ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতা বিক্রেতাদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। জমে উঠেছে ঈদের কেনা কাটা। এখন দোকানিদের এক মূহুর্ত ও দম ফেলার ফুসরত নেই। তেমনি ক্রেতারা ও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন ঈদের কেনা কাটায়। বন্দর নগরীর এমন কোন বিপনী বিতান নেই যেখানে নারী, পুরুষ, তরুন, শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের পদচারনা নেই। মনের আনন্দে পছন্দ মত ঈদের কেনা কাটা সেরে নিচ্ছেন তরুন তরুনীরা । সাজানো হয়েছে রং বেরংয়ের নগরীর অভিজাত বিপনীবিতান গুলো।

এদিকে ঈদের কেনা কাটা নির্বিঘ্নে করতে এবং ক্রেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এবং প্রতিটি মার্কেটে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামরা। এক কথায় নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পুরো চট্টগ্রাম শহর। রোজার মাসের দ্বিতীয় সাপ্তাহ থেকে নগরীর মার্কেট গুলোতে ঈদের বিকিকিনি হালকা শুরু হলে ও ১০ রমজানের পর থেকে বিপনী-বিতান গুলোতে প্রচন্ড রকমের ভীড় দেখা যায়। তীব্র গরম ও তাপদাহ উপেক্ষা করে ক্রেতারা সকাল বিকাল ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।

কিন্তু এসময়ে হাতে কম সময় থাকায় ও গরমের তীব্রতা বেড়ে গেলে ক্রেতারা কেনা কাটার সময় পরিবর্তন করে নেন। সকালে ও দুপুরে প্রখর রোদ ও গরম পড়ায় এখন ক্রেতারা সন্ধ্যার পর মার্কেটে আসে এবং গভীর রাত পর্যন্ত কেনা কাটা সেরে বাসায় ফিরেন। ঈদের কেনাকাটায় লোক সমাগম দিন দিন বাড়ছে।

আগামী ২০ রমজানের পর তা বেড়ে নগরীর মার্কেট গুলোতে তিল ধারনের ঠাই থাকবেনা। ঈদের কেনা কাটা করতে শুধু নগরবাসীই নয়। চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী উপজেলা, ফেনী, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ী, বান্দরবন, কক্সবাজার জেলা থেকে ও প্রচুর লোকজনের সমাগম ঘটে চট্টগ্রামের বিপনী-বিতান গুলোতে।

তাদের মতে এখানে পছন্দ অনুযায়ী মান সম্মত ও অপেক্ষাকৃত কম দামে ঈদের কেনা কাটা করা যায়। এখানে ধনী, গরীব ও মধ্যবিত্ত তিন শ্রেণীর ক্রেতাদের জন্য বিকিকিনির সুযোগ রয়েছে। ধনীদের জন্য রয়েছে অভিজাত বিপনী, আর মধ্যবিত্তদের জন্য রয়েছে দেশের সেরা পাইকারী কাপড়ের বাজার টেরী বাজার, রিয়াজ উদ্দীন বাজার, লাকী প্লাজা, ব্যাংকক সিংগাপুর মার্কেট ও ইপিজেড মার্কেট। আর গরীবদের জন্য রয়েছে নগরীর জহুর হকার মার্কেট।

এদিকে গতকাল সরজমিনে নগরীর আক্তারুজ্জমান সেন্টার, আমিন সেন্টার, সেন্ট্রাল প্লাজা, সানমার ওশানসিটি, মিমি সুপার, আফমী প্লাজা, ভিআইপি টাওয়ার, এ্যাপলো শপিং, মতি টাওয়ার, চকভিউ, চিটাং শফিং সেন্টার,কেয়ারী ও নিউমার্কেটে ঘুরে দেখা গেছে সব মার্কেটেই ক্রেতাদের উঁপচে পড়া ভীড়। কোথাও তিল ধারনের ঠাই নেই।

সাতকানিয়া থেকে আসা মো: সেলিম উদ্দিন নামে এক ক্রেতা বলেন, পরিবারের সবার জন্য সুলভে কেনাকাটা করা যায় বলেই এখানে আসা। বাজেট অনুযায়ী শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রিপিস সব পাচ্ছি টেরিবাজারে। দেশ-বিদেশের সেরা কালেকশন নিয়ে একেকটি শোরুম। মার্কেটের অলিগলিতেও আলোর বন্যা, নতুন কাপড়ের জমজমাট বিকিকিনিও হচ্ছে এখানে । নারী-পরুষের বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের উপচেপড়া ভিড়।

বিক্রয়কর্মীদের কথা বলার ফুরসত নেই। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাইকারি বিপণিকেন্দ্র টেরিবাজারের চিত্র এটি। একসময় থান কাপড়ের জন্য বিশেষভাবে খ্যাতি পেলেও কালের পরিক্রমায় এখন অনেক শোরুম হয়েছে। যেখানে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে একই ছাদের নিচে থান কাপড়ের পাশাপাশি শাড়ি, লুঙ্গি, লেহেঙ্গা, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, শার্ট, জুতা, গহনা সবই মিলছে।

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোসাইন বলেন, শতাধিক বিপণিকেন্দ্র (মার্কেট) নিয়ে টেরিবাজার। ছোট-বড় মিলে দোকান হবে প্রায় ২ হাজার। টেরিবাজারে একসময় শুধু থান কাপড় ও রেডিমেড পোশাক পাইকারি বিক্রি হতো। কিন্তু যখন এখান থেকে কাপড় নিয়ে শপিং সেন্টারগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত বেশি দামে বিক্রি হতে শুরু করে তখন টেরিবাজারের ব্যবসায়ীরাই সুলভে খুচরা বিক্রি শুরু করেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে লাল, নীল, সবুজ, ও বেগুনি রঙের সঙ্গে বিভিন্ন শেড ব্যবহার করা পোশাক বেশি। রয়েছে কাপড়ের মধ্যে অ্যান্ডি কটন ও সুতি এবং তাঁত। শাড়ির ক্ষেত্রে নকশিকাঁথার সেলাই, চুমকি, এমব্রয়ডারি ও কারচুপি করা বিভিন্ন নকশা দেখা গেছে।

হামজারবাগ থেকে কেনাকাটা করতে আসা ইয়াসমিন আকতার বলেন, এখন গরম, তাই ঢিলেঢালা কাপড় কিনে নিয়ে যাচ্ছি। আমার ছেলের জন্য পাঞ্জাবি নিলাম আর মেয়ের জন্য ঢিলেঢালা কাট কাপড় নিলাম।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আমেনা বেগম জানান, ইদের কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দিতে মাকেটে অতিরিক্ত পুরিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চুরি, চিনতাই, চাদাঁবজি রোধে একাদিক টিম মাঠে কাজ করছে।

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ