চমেক হাসপাতালে হাজতির মৃত্যু–নির্যাতনের অভিযোগ


নিউজ ডেস্ক  ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৯:১৮ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রুবেল দে (৩৮) নামের এক হাজতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) মারা গেছেন। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে রুবেলের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার সকালে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাজতি রুবেল চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর দক্ষিণ জ্যৈষ্টপুরার বাসিন্দা সুনীল দে এর ছেলে। কারাগারের ৩ নম্বর পদ্মা ওয়ার্ডে তিনি বন্দি ছিলেন। যদিও কারাগারে রুবেলকে নির্যাতন করা হয়েছে বলে তার পরিবার অভিযোগ তুলেছে।

হাজতি রুবেলের খালাতো ভাই রাজীব দে বলেন, ‘বোয়ালাখালীতে গ্রেপ্তারের পরে আদালত ভবনের হাজতখানায় ২৮ জানুয়ারি দেখা করি। তাকে বিকেলে প্রিজন ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার সময় রুবেল সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। ২ ফেব্রুয়ারি তার সঙ্গে দেখা করতে আমরা চট্টগ্রাম কারাগারে গিয়েছিলাম।

সেদিন চারজন কারারক্ষী হুইলচেয়ারে করে তাকে নিয়ে আসেন। সে দিন রুবেলের ডান ভ্রু ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। সে তাকাতে পারছিল না, মুখ থেকে লালা ঝরছিল। সে সময় রুবেল এক রকম অচেতন অবস্থায় ছিল, আমরা কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফেরত আসি।

সে কেন অসুস্থ কারারক্ষীরা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। ওই দিন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। রোববার আবেদনের পর শুনানি শেষে তার উন্নত চিকিৎসায় জেল সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

গত ২৭ জানুয়ারি রাতে নন্দীপাড়া হরিমোহন এলাকায় চোলাই মদ বিক্রির সময় বোয়ালখালী থানা পুলিশ রুবেলকে গ্রেপ্তার করে। তখন ২০০ লিটার মদ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরের দিন বিকেলে আদালত রুবেলকে কারাগারে পাঠান। তারপর থেকে রুবেল কারাগারেই ছিলেন।

চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন বলেন, মাদক নেওয়ার কারণে হাজতি রুবেলের মানসিক সমস্যা উইথড্রল সিন্ড্রোম ছিল। কারাগারে আসার পর থেকে মাদক নিতে না পেরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা প্রথমে তাকে আলাদা ওয়ার্ডে রেখেছিলাম। পরে তাকে পদ্মা ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাখা হয়।

সেখানে মানসিক সমস্যা আছে এমন একাধিক বন্দিদের রাখা হয়েছে। ভোর রাতে বুকে ব্যথার কথা বললে আমরা তাকে কারা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। কারাগারে কারারক্ষী বা অন্য বন্দি তাকে নির্যাতন করেনি।

রুবেলের আইনজীবী অজয় ধর বলেন, রোববার চট্টগ্রাম ষষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জেল সুপারকে রুবেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। আর রাতেই তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। জেল সুপার এই দায় এড়াতে পারেন না। কারণ আমার মক্কেল পুলিশ হেফাজতে পুরোপুরি সুস্থ ছিল।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ