চট্টগ্রামে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী–কারণ অনুসন্ধানে কমিটি


নিজস্ব প্রতিবেদক ৫ মে, ২০২৩ ১:০৯ : পূর্বাহ্ণ

তীব্র তাপদাহের ফলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এর ‘কারণ অনুসন্ধানে’ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।

সর্বশেষ তথ্যমতে, চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় গেল ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৬৪ জন নারী-পুরুষ-শিশু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। একইসঙ্গে ২৪০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এর মধ্যে বোয়ালখালীতে ৫০ জন, চন্দনাইশে ৩৩ জন, পটিয়ায় ৩২ জন ও আনোয়ারায় ২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়। এসকল উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্তের কারণ সরেজমিনে পরিদর্শন করে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরীকে তদন্ত কমিটির সভাপতি করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন— সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা থোয়াইনু মং মারমা এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মো. নুরুল হায়দার।

সিভিল সার্জনের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধিতে জনস্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অতি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় আনয়নের জন্য সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও কর্মকর্তাকে কতিপয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হলো- সকল স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে ডায়রিয়া/পানিবাহিত রোগে চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন ওষধ চিকিৎসা সামগ্রী মজুদ রাখতে হবে। ডায়রিয়া/পানিবাহিত রোগের চিকিৎসায় জাতীয় গাইডলাইন অনুসরন করতে হবে। গাইডলাইন অনুযায়ী কলেরা শনাক্ত করা কিট ব্যবহার করতে হবে।

ডায়রিয়া/পানিবাহিত রোগের চিকিৎসার তথ্য ডিআইএইচএস-২ এর মাধ্যমে রিপোর্ট করতে হবে। ডায়রিয়া/পানিবাহিত রোগের প্রার্দুভাব বৃদ্ধি পেলে সিভিল সার্জন অফিস ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অবহিত করতে হবে। ডায়রিয়া/পানিবাহিত রোগের স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে এবং মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখতে হবে।

দৈনন্দিন ডায়রিয়া রিপোর্ট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি ইউনিয়নে ১টি ও প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টি করে মেডিকেল টিম পুনঃগঠন করে প্রস্তুত রাখতে হবে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ে জেলা কন্ট্রোল রুম (ফোন নম্বরে ০২৩৩৩৩৫৪৮৪৩) খোলা থাকবে। ডায়রিয়া বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদারকরণ একান্ত জরুরি। স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদারকরণের জন্য উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইনচার্জ ও স্যানিটারি পরিদর্শকদের ফোকাল পারসন মনোনীত করে সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া ডায়রিয়া/পারিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে মসজিদ ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে হবে। মাইকিংয়ে যে সকল বিষয় গুরুত্ব সহকারে প্রচার করতে হবে সেগুলো হলো- নিরাপদ পানি পান করা নিশ্চিত করতে হবে। স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বাসি ও খোলা জায়গায় খাবার গ্রহণ না করা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক পরিধান করা। হাত ধোয়ার অভ্যাস নিশ্চিত করা।

একইসাথে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের বাজার মনিটরিং ও স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার ও প্রত্যেকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে ডায়রিয়া সর্ম্পকে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিএইচসিপিদের স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page