ওসিকে ধাক্কা দেওয়া সেই এএসআইকে খুলনায় বদলি


নিজস্ব প্রতিবেদক ৩ মে, ২০২৩ ৬:৫৯ : অপরাহ্ণ

নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীরকে কনুই দিয়ে গুঁতো মেরে প্রত্যাহার হওয়া শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সেই দেহরক্ষী এএসআই সন্তু শীলকে খুলনা রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম মঙ্গলবার (০২ মে) তার বদলিসংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। আগামী ৬ মের মধ্যে এএসআই সন্তু শীলকে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত তারিখে যোগদান না করলে ৭ মে থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বা স্ট্যান্ড রিলিজ হিসেবে গণ্য হবে বলেও প্রজ্ঞাপণে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনের একটি অনুলিপি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে এসেছে। বিষয়টি মঙ্গলবার বিকেলে সিএমপির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। এর আগে ওসি জাহিদুল কবীরকে কনুই দিয়ে গুঁতো মারার অভিযোগে গত ২৫ এপ্রিল এএসআই সন্তু শীলকে প্রত্যাহার করে নগর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করার আদেশ জারি করেন নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। সন্তু শীল নগর বিশেষ শাখায় কর্মরত ছিলেন।

গত ২০ এপ্রিল শিক্ষা উপমন্ত্রীকে নিয়ে একটি কর্মসূচিতে যাবার পথে ওসি জাহিদুল কবিরকে কনুই দিয়ে গুঁতো মারেন এএসআই সন্তু শীল। এ ঘটনায় ওসি জাহিদুল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পাশাপাশি তার (সন্তু শীল) বিরুদ্ধে সিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

ওসিকে কনুই দিয়ে গুঁতো মারার ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার আসিফ মহিউদ্দীনকে নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার।

জানা গেছে, সেদিন (২০ এপ্রিল) দুপুরে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীরের ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। উপমন্ত্রীকে বহনকারী গাড়ির সামনে ছিল প্রটোকলের গাড়ি, এর আগে ছিল ওসি জাহিদুল কবীরের গাড়ি। পাথরঘাটার নজু মিয়া লেইনের মুখে গাড়ি থামার পর নেমে হেঁটে অনুষ্ঠানস্থলে যাচ্ছিলেন উপমন্ত্রী নওফেল।

পেছনে ছিলেন দেহরক্ষী সন্তু শীল। নওফেলের পাশে ছিলেন ওসি। হঠাৎ এএসআই সন্তু পেছন থেকে এগিয়ে এসে কনুই দিয়ে ওসিকে জাহিদুলকে গুঁতো দেন। এতে তিনি আহত হন। বিষয়টি নিয়ে উপমন্ত্রীর কাছে তাৎক্ষণিক অভিযোগ করলে সন্তু শীলের সঙ্গে ওসি জাহিদুলের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে সিএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিতে উপমন্ত্রী ওসি জাহিদুলকে বলেন।

কনুইয়ের গুঁতোয় আহত ওসি জাহিদুল অনুষ্ঠান শেষে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। এরপর থানায় গিয়ে এএসআই সন্তু শীলের বিরুদ্ধে অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে সন্তু শীলের বিরুদ্ধে সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন ওসি জাহিদুল।

২০১৮ সালের নির্বাচনে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাংসদ হয়ে উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবার পর থেকেই এএসআই সন্তু শীল তার দেহরক্ষী হিসেবে আছেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আছে।

এএসআই সন্তু শীলের বিরুদ্ধে সোনার বার ছিনতাইয়ে জড়িত থাকারও অভিযোগ আছে। ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নগরের হাজারীলেইনে সোনা ব্যবসায়ী দোলন বিশ্বাস তার কাছ থেকে ১০২ ভরি সোনা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্তের সময় বাদী এএসআই সন্তু শীলকে শনাক্ত করার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

এসএস

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page