এস এ পরিবহন থেকে অর্ধকোটি টাকার চোরা ফেব্রিক্স আটক


নিউজ ডেস্ক ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২:৫৩ : অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম মহানগরীর কাজীর দেউড়ী এলাকায় কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এস এ পরিবহনের মাধ্যমে ঢাকার নাররায়ণগঞ্জে পাচার হচ্ছিল ৫১ লাখ ৯১ হাজার টাকার ফেব্রিক্সের চোরাচালান। এর নেপথ্যে ছিলেন টেরীবাজারের ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম।

চোরাচালান রুখে দিতে সেখানেই অভিযান চাালায় কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এসময় সরকারি কাজে বাধা দেয়ার পাশাপাশি অভিযানকারীদের প্রাণনাশের হুমকি দেয় এসএ পরিবহনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি কাজীর দেউড়ী এলাকার এস এ পরিবহনে রাত সাড়ে ৯টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত অভিযানটি পরিচালিত হয়। সেখানে থাকা ট্রাকের ভেতর ৩৫৬টি প্যাকেজ (১২৮ টি বস্তা এবং ২২৮ টি রোল) সাদা, সাদা প্রিন্ট, হলুদ, জলপাই, হালকা বেগুনিসহ ৮টি ভিন্ন ভিন্ন রঙের ৮৬১২ দশমিক ৭৯ কেজি নিট ফেব্রিক্স পাওয়া যায়।

রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম চাকমা এ সব তথ্য জানান।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আটক করা পণ্যচালানটির মালিকানা দাবি করেন টেরিবাজারের ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম। পরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নিলামের মাধ্যমে ৩৫৪ রোল ফেব্রিক্স পণ্য কিনে নেয় নজরুল।

অথচ যে পণ্যগুলা ট্রাক থেকে আটক করা হয় সেগুলোর গায়ে ২০২২ সালের বিভিন্ন তারিখের স্টিকার পাওয়া যায়। তাই পণ্যের দাবিদার নজরুলের বর্ণণা দেয়া পণ্যের সাথে আটককৃত পণ্য এক নয়। তাছাড়া আটককৃত পণ্যচালানের সাথে মূসক চালানও পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি আটক করা ট্রাকের চালকের কাছ থেকে জানা গেছে, পণ্যচালানটি কর্ণফুলী এলাকার চরলক্ষ্যা নামক স্থানে অবস্থিত একটি গার্মেন্টস গুদাম থেকে নিট ফেব্রিক্স লোড করা হয়। পণ্যচালান পরিবহনের পক্ষে দলিলাদি দেখাতে বললে গাড়িচালক বিক্রয় সংক্রান্ত দলিলাদি দেখাতে পারেন নি।–এতে প্রমাণিত হয় যে কাভার্ড ভ্যানটি টেরি বাজার থেকে লোড করা হয়নি এবং এসএ পরিবহনের খাতুনগঞ্জ ব্রাঞ্চ থেকে বুকিং করা হয়নি। মোটকথা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা পণ্যগুলোর চোরাচালানই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

উত্তম চাকমা বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি সংগ্রহ করা সিসিটিভির ফুটেজ আমরা দেখেছি। সেখানে দেখা গেছে রাত সাড়ে ৮টায় কর্ণফুলি থানার চরলক্ষ্যা এলাকার একটি গার্মেন্টসের গুদাম থেকে নিট ফেব্রিক্স লোড করে রাত ৯টায় কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ পাশ হতে কর্ণফুলি শাহ আমানত সেতু হয়ে টোল প্লাজায় পৌছায়। সেখান থেকে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার ও আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার পার হয়ে রাত সাড়ে ৯ টায় কাজীর দেউড়ী আসে।

চালানটি অবৈধভাবে নজরুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের রাজীব সাহার কাছে পাঠাচ্ছিলেন। চালানটি বৈধ হলে ১৫ বা ১৬ হাজার টাকায় ট্রাকে করে নারায়ণগঞ্জ পাঠানো সম্ভব। কিন্তু ৫৫ হাজার টাকা খরচ করে এ চালান কেন কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠানো হলো সেটাই আমাদের সন্দহের কারণ।

পাশাপাশি এসএ পরিবহনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাদের কর্মকর্তাদের হুমকি দেয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এসএস/ফোরকান

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page