ভারতকে হারিয়ে সেমিফাইনালে এক পা দক্ষিণ আফ্রিকার


স্পোর্টস ডেস্ক  ৩১ অক্টোবর, ২০২২ ১১:২২ : পূর্বাহ্ণ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের ম্যাচে ভারতকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ জয়ে গ্রুপ ‘বি’তে সেমিফাইনালে যাওয়ার লড়াইটা আরো জমিয়ে তুললো দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এল বাভুমার দল। ৪ পয়েন্ট করে আছে বাংলাদেশ ও ভারতের।

রোববার (৩০ অক্টোবর) পার্থে শুরুতে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। জবাবে ৫ উইকেট হারালেও ২ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়ে শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ছিলো ভারত। প্রথম ৫ ওভারে মাত্র ২৬ রান তুলে দুই ওপেনার রোহিত শর্মা (১৪ বলে ১৫) আর লোকেশ রাহুলকে (১৪ বলে ৯) হারিয়ে বসে দলটি।

এরপর বিরাট কোহলি (১১ বলে ১২), দীপক হুদা (০), হারদিক পান্ডিয়ারা (২) একে একে সাজঘরের পথ ধরলে ভীষণ বিপদে পড়ে ভারত। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে এরপর বলতে গেলে একাই টেনে তুলেছেন সূর্য।

ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে আউট হন সূর্য। ৪০ বলে তার ৬৮ রানের ইনিংসে ছিলো ৬ চার আর ৩ ছক্কার মার। সূর্য যখন আউট হয়েছেন, ততোক্ষণে ভারত বিপদ কাটিয়ে ১২৭ রান তুলে ফেলেছে ৮ উইকেটে। বাকি ৭ বলে আর ৬ রান তুলে ১৩৩ রানে থামে ভারতের ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল লুঙ্গি এনগিদি। ২৯ রানে একাই ৪ উইকেট শিকার করেন এই পেসার। ১৫ রানে ৩ উইকেট নেন ওয়েন পারনেল।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ভারতের মতোই ব্যর্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার। দলীয় ৩ রানে ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারায় তারা। এবারের বিশ্বকাপে দারুণ ফর্মে থাকা কুইন্টন ডি কক বিদায় নেন ১ রান করে। তিনে নামা রাইলি রুশো তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। দুটি উইকেটই শিকার করেন ভারতীয় পেসার আর্শদীপ সিং।

চাপের মুখে প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ধরে খেলার চেষ্টা করলেও আবারো ব্যর্থ হয়েই ফিরেছেন। এবার ১৫ বলে ১০ রান করে তিনি বিদায় নিয়েছেন মোহাম্মদ শামির বলে। তবে এরপর এইডেন মার্করাম ও ডেভিল মিলার মিলে শক্ত করেই হাল ধরেন। যদিও তাদের রান তোলার গতি শুরুতে ছিলো ওয়ানডেসুলভ। প্রথম ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে মাত্র ৪৩ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকার ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু আসলে ১১তম ওভার থেকেই। হার্দিক পান্ডিয়ার ওই ওভারে ১৬ রান। পরের ওভারে অশ্বিনের বলে সহজ কাচ ফেলে দেন বিরাট কোহলি। মার্করামের শটে বল ডিপ মিড উইকেটে থাকা কোহলির হাতে সরাসরি পৌঁছালেও সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফেলে দেন তিনি। এই ক্যাচ মিসের জন্য পরে মূল্য চোকাতে হয় ভারতকে। পরের ওভারে শামির বলে মিলারকে রান আউটের সুযোগ নষ্ট করেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত।

মুফতে পাওয়া সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগান মার্করাম ও মিলার। পরের ওভারেই দুই ছক্কায় তারা ১৭ রান তোলেন। রানের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি ফিফটিও তুলে নেন মার্করাম; মাত্র ৩৮ বলে। ভারত যখন ক্রমশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যাচ্ছে, ঠিক তখন আঘাত হানেন হার্দিক। তার বলে সূর্যকুমার যাদবের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন মার্করাম। ফলে ভেঙে যায় ৭৬ রানের জুটি। মার্করাম ৪১ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে অবশ্য জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান।

শেষ চার ওভারে ৩২ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে। ১৭তম ওভারে আর্শদীপের বলে আসে ৭ রান। তাতে তিন ওভারে লক্ষ্য নেমে আসে ২৫ রানে। অশ্বিনের করা পরের ওভারের প্রথম দুই বলেই ব্যাক টু ব্যাক ছক্কা হাঁকিয়ে কাজটা আরো সহজ করে দেন মিলার। কিন্তু চতুর্থ বলে ট্রিস্টান স্টাবসকে (৬) ললেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন অশ্বিন। তবে ওভারটিতে আসে ১৩ রান।

শেষ দুই ওভারে ১২ রান দরকার ছিলো দ. আফ্রিকার। শামির ওভারের প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে ফিফটির দেখা পান মিলার। তবে ওই ওভারে আসে ৬ রান, ফলে শেষ ওভারে লক্ষ্য ছিলো ৬ রান। কিন্তু শেষ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন মিলার। শেষ পর্যন্ত ৪৬ বলে ৪ চার ও ছক্কায় ৫৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।

সকালের-সময়/এমএফ

Print Friendly, PDF & Email

আরো সংবাদ


You cannot copy content of this page