ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক আলো ছড়াচ্ছেন তুষার ইমরান। জাতীয় লিগের শেষ তিন ম্যাচে টানা সেঞ্চুরি করেছেন ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ছন্দটা তিনি টেনে এনেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগেও (বিসিএল)। বিকেএসপিতে বিসিএলের চলমান চতুর্থ রাউন্ডে বিসিবি উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলের এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
বিসিএল দারুণ যাচ্ছে নাঈম ইসলামেরও। বিসিবি উত্তরাঞ্চলের হয়ে তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন দুটি। সিলেটে দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে তো ফিরেছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি থেকে ১৫ রান দূরে থেকে। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভালো খেলছেন অলক কাপালি, জুনায়েদ সিদ্দিকও। বোলিংয়ে আবদুর রাজ্জাক নিয়মিতই জাদু দেখাচ্ছেন। এবার বিসিএলেও এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও তিনি। বোলিংয়ে তাঁকে অবশ্য চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন শুভাগত হোম। কদিন আগে ফতুল্লায় দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নিয়ে হইচই ফেলে দিলেন এই অলরাউন্ডার।
এই যে তুষার, নাঈম, জুনায়েদ, অলক, রাজ্জাকদের কথা বলা হচ্ছে, প্রত্যেকের কিন্তু টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সময়ের স্রোতে তাঁদের সামনে এখন কঠিন বাস্তবতা। জাতীয় দলের দরজাটা কি তবে বন্ধই হয়ে গেল? শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ সামনে রেখে আজ ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। সেই তালিকায় তুষার-রাজ্জাকদের ঠাঁই হয়নি। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে যাঁরা দুর্দান্ত খেলছেন তাঁদের ভবিষ্যৎ কী? জাতীয় দলের দরজাটা কি তবে বন্ধই হয়ে গেল তাঁদের জন্য?
তুষারদের ফের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন কিছু বাস্তবতা তুলে ধরলেন, ‘‘অনেক দিন আমাদের ‘এ’ দলের সফর হচ্ছে না। গত এক বছর এইচপির (হাইপারফরম্যান্স) কোনো প্রোগ্রামও আমরা করতে পারিনি। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেই এখানে খেলোয়াড় আসে। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কিছু খেলোয়াড় কিছুদিন ধরেই অসাধারণ খেলছে। নাম যদি বলি, তুষার ইমরান ও অলক কাপালিরা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করছে। এদের একটা প্ল্যাটফর্ম আমাদের দিতে হবে।’’
মিনহাজুলের কথায় তাই আশা খুঁজে পেতে পারেন তুষার-রাজ্জাকরা, ‘‘অবশ্যই এরা আমাদের নজরে আছে। বয়সের জন্য তারা আমাদের নজরের বাইরে চলে যাইনি। তবে তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে হলে অবশ্যই ‘এ’ দল কিংবা এইচপি দলের হয়ে কোনো সফর করতে হবে। তখন বোঝা যাবে তাদের অবস্থাটা আসলে কেমন।’’
ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত খেলা ক্রিকেটারদের সরাসরি কেন জাতীয় দলে সুযোগ দিতে চান না নির্বাচকেরা? তারও ব্যাখ্যা দিলেন মিনহাজুল, ‘‘আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে সব সময় কথা হয়। বিকেএসপিতে যে উইকেটে খেলা হয়, বিশ্বের আর কোনো দেশে এত ফ্ল্যাট উইকেটে খেলা হয় না। যারা রান করছে তাদের সুযোগ দিতে (জাতীয় দলে) গেলে আগে একটা প্ল্যাটফর্ম আগে তৈরি করতে হবে। সেখানে তাদের পারফরম্যান্স দেখে জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা হবে। এখন ২৪জন খেলোয়াড়ের একটা পুল আছে। ‘এ’ দলের সফরটা যদি হয় তখন তাদের একটা সুযোগ দিতে পারব।’’